লক্ষ্মীপুর- ৩
লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:২৭ পিএম
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:৩৯ পিএম
বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ট্রাক মার্কার প্রার্থী এমএ সাত্তার। প্রবা ফটো
কেউ নৌকার বাইরে ভোট করলে তারা ‘মানুষের সন্তান নয়, জারজ সন্তান’ বলে আওয়ামী লীগ নেতা যে মন্তব্য করেছেন— তা মানুষের জন্য চরম অবমাননাকর বলে মনে করেন লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ট্রাক মার্কার প্রার্থী এমএ সাত্তার। তিনি বলেন, ‘বক্তব্যের মাধ্যমে নিরুপিত হয় একটি মানুষের মানসিকতা ও যোগ্যতা সম্পর্কে। জারজ সন্তান কথাটা একেবারেই সঠিক নয়। এটা উচ্চারিত না করাই ভাল। আমরা কেউ কাউকে জারজ বলতে পারি না। এ কথাটা একজন মানুষকে চরমভাবে অপমানিত করে। এটা মোটেই উচিত না।’
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
লক্ষ্মীপুর- ৩ আসনে নৌকার প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক পিংকু। তার সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ভোটের মাঠে রয়েছেন রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের এমএ সাত্তার।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নৌকার প্রার্থীর পক্ষে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পাঁচপাড়া বাজার ও কামারহাটে পথসভা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে পথসভায় চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী বক্তব্য দেন।
বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলতে চাই, যারা জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলেন, তারা যদি নৌকার বাইরে ভোট করেন, বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে ভোট করেন, তাদের আমি বলব, তারা জারজ সন্তান, মানুষের সন্তান নও।’
স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে এই আওয়ামী লীগ নেতা আরও বলেন, ‘যারা বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থীর ট্রাক মার্কার ভোট করবেন, আমি আপনাদের হুঁশিয়ার করে বলে দিতে চাই- পার্শ্ববর্তী গ্রাম-ইউনিয়ন আমার, আমি সবাইকে চিনি। যারা নৌকার বাইরে ভোট করবেন, তাদের অস্তিত্ব থাকবে না ৭ তারিখের পরে।’
আওয়ামী লীগ নেতার এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সাত্তার বলেন, ‘নৌকার কর্মীদের বক্তব্যগুলো অবশ্যই হুমকি মনে করছি। যারা বলছে, ৭ তারিখের পর আমার নেতাকর্মীকে দেখে নেবে, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি- আমি সংসদ নির্বাচন করতে এসেছি। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। আমার কোনো নেতাকর্মী সমর্থক কাউকেই ছেড়ে আমি যাব না। অতীতেও আমার এমন কোনো রেকর্ড নেই। আমি নেতাকর্মীদের সঙ্গে আছি, থাকব এবং আজীবন থাকব। তাদেরকেও সেই শিক্ষাই দিচ্ছি। তবে আমার নেতাকর্মীরা যেখানে কাজ করতে যাচ্ছে, সেখানেই হয়রানির শিকার হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি শান্তিপূর্ণ মানুষ। আমার নেতাকর্মীরাও সেভাবে কাজ করবে। নেতাকর্মীদের বলেছি- আমরা ভোট থেকে একটা পরিবর্তন করতে চাই, এজন্য মানুষের ধারে ধারে গিয়ে সবচেয়ে বিনয়ী হতে হবে। যে মানুষ যত বড় হবে, তত বেশি বিনয়ী ও নমনীয় হবে। কথাবার্তা চালচলনে সেই ভাবনাটুকু মাথায় থাকতে হবে। নেতাকর্মীদের জন্য নির্দেশনা রয়েছে, তারা যাবে প্রচারণা করবে। কেউ যদি গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে যায়, তাহলে অসীম ধৈর্যের সঙ্গে তা মোকাবেলা করতে হবে। কেউ অশালীন কথা বললে, আমাদের মুখ থেকে যেন অশালীন কথা না বের হয়।’