মো. শামীম মিয়া, নরসিংদী
প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:০৭ এএম
আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:৪০ পিএম
নৌকা ও ঈগল প্রতীক। ছবি : সংগৃহীত
এবার নরসিংদীর পাঁচ আসনের মধ্যে চারটিতেই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এসব আসনের শক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রতীক হিসেবে বেছে নিয়েছেন ‘ঈগল’। শুধু নরসিংদী-২ (পলাশ) আসনে নৌকার বিপরীতে তেমন কোনো শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী নেই।
নরসিংদী-১ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান এমপি লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরুর (বীরপ্রতীক) মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান। একসময় নজরুল ইসলাম হিরু ও কামরুজ্জামান কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নরসিংদীতে রাজনীতি করলেও এখন দুজন দুই মেরুতে অবস্থান করছেন। ফলে জেলা আওয়ামী লীগও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এই নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেব হোসেন নৌকার প্রার্থীর পক্ষে এবং সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা কাজী মোহাম্মদ আলী কামরুজ্জামানের পক্ষে প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন। এ আসনে নৌকার হিরু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুজ্জামান ছাড়াও তৃণমূল বিএনপি, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ কংগ্রেসসহ মোট আটজন প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন।
নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনে মোট আটজন প্রার্থী থাকলেও নৌকার প্রার্থী ফজলে রাব্বি খানের সঙ্গে লড়াই হবে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লার সঙ্গে। সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আউয়াল খান কিরনের ছেলে এবং শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও টানা ২৫ বছর শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন অর রশিদ খানের ভাতিজা ফজলে রাব্বি খান। বাবা জনপ্রিয় নেতা রবিউল আউয়াল খান কিরন ও চাচা হারুন অর রশিদ খান দলীয় কোন্দলের কারণে দুজনেই রাজনৈতিক হত্যার শিকার হন। এদিক বিবেচনায় এলাকার সাধারণ ভোটাররা আবেগে তাকে ভোট দিতে পারেন।
অপর দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম মোল্লা এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন। তার মাঠ অনেকটাই গোছানো। তা ছাড়া এলাকায় তার ব্যাপক পরিচিত রয়েছে। তিনি সংসদ সদস্য থাকাকালীন দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন।
নরসিংদী-৪ (মনোহরদী-বেলাব) আসনে চারজন প্রার্থীর মধ্যে নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি শিল্পমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও মনোহরদী উপজেলা পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সাইফুল ইসলাম খান বীরুর মধ্যে তীব্র লড়াই হবে। বীরু সাবেক সেনাপ্রধান ও সাবেক মন্ত্রী লে. জেনারেল (অব.) নূরউদ্দিন খানের ভাতিজা।
নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসনে নৌকার মাঝি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ছয়বারের সংসদ সদস্য প্রবীণ রাজনীতিবিদ রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু। তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে আছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান। একসময় রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর অনুসারী ছিলেন মিজানুর রহমান। তার অনুসারী থাকা অবস্থায়ই রাজনীতির মাঠ গুছিয়েছেন উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়াম্যান মিজানুর রহমান। এ আসনে মোট ৯ জন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন।
চারটি আসনে নৌকার প্রার্থীরা তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার শঙ্কায় থাকলেও কিছুটা নির্ভার নরসিংদী-২ (পলাশ) আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান এমপি ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপ। এখানে তার বিরুদ্ধে শক্তিশালী কোনো প্রার্থী নেই। তার স্ত্রী আফরোজা সুলতানা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও প্রতীক পাওয়ার পর সংবাদ সম্মেলন করে স্বামীকে সমর্থনের কথা জানান। সেই হিসেবে বর্তমানে এই আসনে জাতীয় পার্টিসহ মোট তিনজন প্রার্থী রয়েছেন।