সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:১১ পিএম
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৫৪ পিএম
থানা হাজতে মারা যাওয়া আনোয়ার হোসেন। প্রবা ফটো
জামালপুরের সরিষাবাড়ী থানা হাজতে আনোয়ার হোসেন নামে এক আসামির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ দাবি করছে, আসামি স্ট্রোকজনিত কারণে মারা গেছেন। তবে হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকালে ময়নাতদন্ত শেষে আসামির মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
মৃত আনোয়ার উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের চাপারকোনা গ্রামের আব্দুস সামাদ দুলুর ছেলে। তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক। সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুশফিকুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মেহেদি হাসান বলেন, ‘আসামি আনোয়ার হোসেনকে হাসপাতালে আনার পর অক্সিজেন দেওয়া হয় ও ইসিজি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে জীবিত পাওয়া যায়নি। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছিল।’
তবে সরিষাবাড়ী থানার ওসি মুশফিকুর রহমান মোবাইল ফোনে দাবি করেন, ‘আনোয়ারকে থানায় আনার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।’
পুলিশ সূত্র জানায়, পেশায় কৃষক আনোয়ার সরিষাবাড়ী থানায় হওয়া একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন। মঙ্গলবার বিকালে তাকে নিজ গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তাকে থানা হাজতে রাখা হয়। মধ্যরাতে হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে পুলিশ তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
আনোয়ারের বাবা আব্দুস সামাদ দুলু বলেন, মারামারিসংক্রান্ত একটি মামলায় তার ছেলে আসামি ছিল। বেলা ৩টার দিকে বাদীর উপস্থিতিতে চাপারকোনা বাজার থেকে তার ছেলেকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। বাদীর যোগসাজশে পুলিশ নির্যাতন করায় তার ছেলে মারা গেছে।
মৃতের স্ত্রী আলপনা বেগম বলেন, ‘পুলিশ সুস্থ মানুষ ধরে নিয়ে গেছে। থানায় নেওয়ার পর সবশেষ সন্ধ্যায় তার সঙ্গে ফোনে কথা হয়। তখনও আমার স্বামী ভালো ছিলেন। রাত ১২টায় হঠাৎ খবর আসে আমার স্বামী স্ট্রোক করেছে।’
বোন নুরজাহান বেগম বলেন, ‘আমার ভাই সুস্থ ছিল। পুলিশ ধরে নিয়ে নির্যাতন করেছে, তাই তিনি মারা গেছেন।’ ভাই হত্যার বিচার দাবি করেন তিনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুর রহমান বলেন, ‘দোলভিটি গ্রামের ফিরোজ মিয়ার সঙ্গে ১০ ডিসেম্বর চাপারকোনা বাজারে আনোয়ার হোসেনের মধ্যে মারামারি হয়। এ ঘটনায় ফিরোজের ভাই সোহেল রানা বাদী হয়ে ২৫ ডিসেম্বর থানায় মামলা করেন। এ মামলায় আনোয়ার আসামি ছিলেন।’