চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:৫১ পিএম
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৮:০০ পিএম
চট্টগ্রাম বন্দর। ফাইল ফটো
রূপকল্প ২০৪১ কে সামনে রেখে ২০২৪ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ শুরু হবে জানিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর স্মার্ট বন্দরে পরিণত হবে।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যসহ দূরপ্রাচ্যের দেশগুলো তাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশকে একটি সম্ভাবনার দেশ হিসেবে বিবেচনা করে। এজন্য বিদেশি অনেক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগ করতে চায়। পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনার জন্য সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। বে-টার্মিনালেও অনেক বিদেশি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে পিএসএ সিঙ্গাপুর ও ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে আমাদের এক ধরনের সমঝোতা হয়েছে। তারা বে-টার্মিনাল এলাকায় দুটি টার্মিনাল নির্মাণে বিনিয়োগ করবে। প্রতিষ্ঠান দুটির সঙ্গে আগামী বছরে চুক্তি স্বাক্ষর হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বন্দরের অগ্রাধিকার প্রকল্প বে-টার্মিনালের মাল্টিপারপাস টার্মিনালের নিমার্ণ কাজ ২০২৪ সালের মাঝামাঝিতে শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে টার্মিনাল নির্মাণের জন্য আবুধাবি পোর্ট গ্রুপ (এডি পোর্টস) এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব দাখিল করেছে। বে-টার্মিনালের কন্টেইনার টার্মিনাল-১ ও ২ নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য যথাক্রমে পিএসএ সিঙ্গাপুর ও ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে ২০২৪ সালে চুক্তি স্বাক্ষর হবে। দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য বে-টার্মিনালের চতুর্থ টার্মিনাল হিসেবে গ্যাস ও অয়েল টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ওই টার্মিনাল নির্মাণের জন্য একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা তিন দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব করেছে। এসব বিনিয়োগের মাধ্যমে টুল পোর্ট পদ্ধতির পরিবর্তে ল্যান্ডলর্ড পোর্ট মডেলে পরিণত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর।’
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ‘লালদিয়া কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ডেনমার্কে বিশ্ববিখ্যাত টার্মিনাল অপারেটর এপিএম টার্মিনাল প্রস্তাব দিয়েছে; যা বর্তমানে পিপিপি প্রকল্প হিসেবে প্রক্রিয়াধীন। আশা করা হচ্ছে, আগামী বছর ৩ জানুযারি বাংলাদেশ-ডেনমার্ক যৌথ প্ল্যাটফর্ম সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হবে। এই টার্মিনাল নির্মাণের কাজও আগামী বছর শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী ২০২৪ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে ব্যাপক উন্নয়নযজ্ঞ শুরু হবে।’
বন্দরে আমদানি-রপ্তানির কার্গো হ্যান্ডলিং লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়ার পর এখন ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে বিশ্বে এক ধরনের অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই অস্থিরতা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলছে। যে কারণে অর্থনীতিতে এক ধরনের মন্দা চলছে। এর মধ্যেও আমি আপনাদের সু-সংবাদ দিতে চাই ২০২৩ সালের চট্টগ্রাম বন্দর যেই পরিমাণ আমদানি-রপ্তানির কার্গো হ্যান্ডলিং করেছি এটি আশাজনক। অনেকেই বলেছিল হয়তো এবার চট্টগ্রাম বন্দর ৩ মিলিয়ন ক্লাব থেকে ছিটকে পড়বে। অনেকে আশঙ্কা করেছিল হয়তো থাকতে পারবে না। কিন্তু বাস্তবে সেটি হয়নি। ইতোমধ্যে আমরা ৩ মিলিয়ন কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করতে সক্ষম হয়েছি। ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর ৩০ লাখ ৪ হাজার ৫০৫ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করেছে। একই সময়ে এবার কার্গো হ্যান্ডলিংও অনেক বেড়েছে। ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলতি ইংরেজি বর্ষে আমরা ১১ কোটি ৮৩ লাখ ৪৫ হাজার ৫৭৬ মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং করেছে। যা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১২ কোটি মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে।’