প্রবা প্রতিবেদক, বরিশাল
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩:১৫ পিএম
শাহীন ফকির। প্রবা ফটো
জন্মের পর পোলিও আক্রান্ত হয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বেড়ে ওঠা মাত্র ১৮ ইঞ্চি উচ্চতার ত্রিশোর্ধ্ব বয়সি শাহীন ফকিরের বাড়ি বরিশালের মুলাদী উপজেলার চরকমিশনার গ্রামে। সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নে হায়াতসার গ্রামের ফুলতলা বাজারের পূর্বে ছোট একটি দোকানে মোবাইল রিচার্জ, মোবাইল ব্যাংকিংসহ চকলেট ও বিস্কুট বিক্রি করেন।
চলাচলে অক্ষম শাহীন ক্রিকেটার তামিম ইকবালের ভক্ত। তাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর শাহীন ফকিরকে সিলেটে নিয়ে সাক্ষাৎ করেন তামিম। সাক্ষাৎ করিয়ে দেন জাতীয় দলের অন্য ক্রিকেটারদের সঙ্গে। এ ছাড়াও সিলেট স্টেডিয়ামে একটি খেলা দেখারও ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। সেই সাক্ষাৎকালে নিজের চলাচলের সুবিধার্থে তামিমের কাছে একটি মোটরচালিত হুইল চেয়ারের আবদার করেছিলেন শাহীন। সেদিনের সে আবদার গত আগস্টে পূরণ করেন তামিম ইকবাল।
তামিমের দেওয়া সেই মোটরচালিত আধুনিক হুইল চেয়ারে কারও সহায়তা ছাড়াই চলাফেরা করতে পারেন শাহীন।
গত সোমবার দুপুরে তার দোকানে গিয়ে দেখা গেছে, ৮/১০ জন শিশু-কিশোর তার দোকান ঘিরে খোশগল্প করছে।
তার কাছে যেতেই মোটরচালিত হুইল চেয়ার পাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে শাহীন ফকির বলেন, আগস্টে খবর দিয়ে নিয়ে মোটরচালিত হুইল চেয়ারটি দিয়েছেন তামিম ভাই। এর আগে প্রতিদিন দোকান থেকে বাড়ি আসা-যাওরার সহযোগিতার জন্য একজনকে মাসিক ৫০০ টাকা দিতে হতো। এখন হুইল চেয়ারে করে বাড়িতে আসা-যাওয়া করি।
তামিম ইকবালকে ধন্যবাদ জানিয়ে শাহিন বলেন, হুইল চেয়ার পেয়ে মসজিদে মিলাদ পড়িয়েছি। তামিম ভাইয়ের জন্য দোওয়া করেছি। আল্লাহ যেন তাকে সব সময় ভালো রাখেন।
নিজেকে ক্রিকেট পাগল দাবি করে শাহীন বলেন, গত বিশ্বকাপে তামিম ইকবালকে ষড়যন্ত্র করে রাখা হয়নি। দোয়া করি তিনি আবার ফিরে আসবেন।
স্থানীয় বাসিন্দা তরুণ রাকিব বিশ্বাস বলেন, প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে ক্রিকেটার তামিম ইকবাল তাকে একটি গাড়ি দিয়েছেন। আমরা এখানে যারা সব সময় থাকি তারা গাড়ি (হুইল চেয়ার) থেকে দোকানে উঠিয়ে দেই। দোকান থেকে গাড়িতে উঠিয়ে দিলে বাড়ি যায়।
রাকিব বলেন, একজন প্রতিবন্ধী মানুষ হয়ে নিজের মতো করে ব্যবসা-বাণিজ্য করে খায়। আমরা এলাকাবাসী সব সময় সহায়তা করি। একসময় মানুষের সহায়তা ছাড়া চলাফেরা করতে পারত না, এখন নিজে নিজেই বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ান ইচ্ছামতো।