নোয়াখালী-২
নোয়াখালী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:৩৩ এএম
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:৫৪ এএম
নোয়াখালীতে নৌকার প্রার্থীকে প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছেন নেতাকর্মীরা। প্রবা ফটো
নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোরশেদ আলমকে প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে সেনবাগ পৌর শহরের দক্ষিণ বাজার থেকে মিছিল শুরু করে প্রধান প্রধান সড়ক হয়ে থানা চত্বর পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করেন নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, নোয়াখালী-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোরশেদ আলমকে প্রাণনাশের হুমকি দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক। এ ব্যাপারে রবিবার দুপুরে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমানের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন মোরশেদ আলম নিজেই। প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে সেদিন রাতেই সেনবাগ পৌর শহরে বিক্ষোভ করেছেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এ সময় বেঙ্গল গ্রুপ ও আরটিভির পরিচালক সাইফুল আলম দীপু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম কবির, সেনবাগ পৌরসভার মেয়র আবু নাসের দুলাল, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি আ স ম জাকারিয়া আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক সাহজাহান পাটোয়ারী, আওয়ামী লীগ নেতা কামাল উদ্দিন চৌধুরী, ছাত্রলীগ নেতা আবু শোয়েবসহ ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও
জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে
স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক সেনবাগের ছমির মুন্সির হাটের
পাশে তার প্রতিষ্ঠিত লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক মহিলা কলেজে স্বতন্ত্র প্রার্থীর
সমর্থনের এক অনুষ্ঠানে মোরশেদ আলমকে প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকি দেন। তিনি তার
বক্তব্যে মোরশেদ আলমকে রক্তাক্ত করে বঙ্গোপসাগরে নিয়ে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন। এতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ব্যক্তিগত নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার কথা উল্লেখ করেন এবং
সত্যতার আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তার সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করার
আবেদন জানান।
লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। তারপর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভুইয়ার কাঁচি প্রতীকের পক্ষে কাজ করছেন। শুক্রবার দুপুরে নিজের অনুসারীদের নিয়ে কাঁচি প্রতীকের সমর্থনে নিজের প্রতিষ্ঠিত কলেজে এক সভার আয়োজন করেন। সভায় মোরশেদ আলমকে রক্তাক্ত করে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন মানিক। এ ধরনের একটি ভিডিওচিত্র সমাজমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমরা রক্তাক্ত করে
বঙ্গোপসাগরে নিয়ে ফেলব আপনাকে। আজ আমরা সেনবাগের আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। বাড়ি ফেরা না
পর্যন্ত আমরা ঐক্যবদ্ধ। আমাদের বিজয় আমরা সুনিশ্চিত করব। আজকে সময় এসেছে ব্যালটের
মাধ্যমে জবাব দেওয়ার। সুতরাং আপনাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নাই। যদি কেউ ব্যালটে
হাত দিতে আসে তাহলে তার জবাব হবে বুলেটের মাধ্যমে। আমরা যদি শুধু টাকার ওপর
নির্ভরশীল থাকি তাহলে আমাদের নেতাকে (আতাউর রহমান ভুইয়া) জেতাতে পারব না।’
অভিযোগের বিষয়ে লায়ন
জাহাঙ্গীর আলম মানিক বলেন, ‘ফেসবুকে একজন কর্মকর্তার নিউজের একটি বক্তব্যের সূত্র ধরে
আমি একটি কথা বলেছিলাম। কিন্তু নৌকা প্রতীকের লোকজন সে সংবাদের খণ্ডিত অংশটুকু
ছড়িয়ে দিয়ে সমাজমাধ্যমে অপপ্রচার করছে।’
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘নোয়াখালী-২ আসন থেকে আমরা নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি। কয়েকটি ঘটনায় একাধিক প্রার্থী ও সমর্থককে শোকজ করা হয়েছে। প্রার্থীদের অভিযোগগুলো আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।’