প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৫৯ পিএম
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২:০১ পিএম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেললাইনের ক্লিপ খোলার অভিযোগে আটক যুবক। প্রবা ফটো
ট্রেনে নাশকতার চেষ্টা অব্যাহত থাকায় আনসারের পর এবার সিলেটে র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেললাইনের ক্লিপ খোলার অভিযোগে আরিফ নামে এক যুবককে আটক করেছেন আনসার বাহিনীর সদস্যরা। শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) বিকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের পৈরতলা রেলগেট ব্রিজ থেকে তাকে ক্লিপ খোলার সময় আটক করা হয়। আরিফ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে।
আনসার ও ভিডিপির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমান্ড্যান্ট মো. ইসমাইল হোসেন জানান, আরিফ পৈরতলা গণকবর এলাকায় রেললাইনের ক্লিপ খুলছিলেন। এ সময় দায়িত্বরত আনসার বাহিনীর সদস্যরা তাকে দেখে ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক করেন। তার কাছ থেকে চারটি ক্লিপ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে আটক করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় জিআরপি থানায় মামলা হবে বলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থানার ওসি মো. আসলাম হোসেন জানান।
এর আগে শুক্রবার বিকালে রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ঢাকা) মোহাম্মদ সফিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, নাশকতা রোধে রাতের কিছু ট্রেন বন্ধের পাশাপাশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তায় সারা দেশে ২ হাজার ৭০০ আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এরই মধ্যে তারা কাজ শুরু করেছেন। বিভিন্ন স্থানে রেললাইনে টহল বাড়ানো হয়েছে, বিভিন্ন রুটে ট্রেন যাওয়ার আগে ইঞ্জিন ও ট্রলি দিয়ে অ্যাডভান্স পাইলটিং করা হচ্ছে।
সিলেটে র্যাব মোতায়েন
ক্ষেত্রবিশেষে নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করারও ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শুক্রবার রাত থেকে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় ট্রেনের বিশেষ নিরাপত্তায় র্যাব মোতায়েন করা হয়। র্যাব-৯-এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার মো. মোমিনুল হক জানান, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার রেলস্টেশনগুলোতে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। এ ছাড়া স্টেশনগুলোতে নিয়মিতভাবে টহল দেওয়া হচ্ছে। নাশকতাকারী ও দুষ্কৃতকারীরা যেন কোনো প্রকার দাহ্য পদার্থ ও বিস্ফোরক দ্রব্য কিংবা অবৈধ মালামাল যেমন মাদক ও আগ্নেয়াস্ত্র ইত্যাদি বহন করতে না পারে সেজন্য এই পাঁচ জেলার রেলস্টেশন এলাকা এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোয় বিভিন্ন সময় ধারাবাহিকভাবে চেকপোস্ট কার্যক্রম পরিচালনা করছে র্যাব।
গাজীপুরে ২০ মিটার রেললাইন কেটে ফেলায় সাতটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার মতো ঘটনায় রেল যোগাযোগে সম্প্রতি আতঙ্ক ছড়ায়। তা ছাড়া রেলে প্রায় দুই মাস ধরে সময়-অসময় আগুন দেওয়ার ঘটনায় যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুনে মা-মেয়েসহ চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় সরকার বিশেষভাবে নিরাপত্তা জোরদার শুরু করে।
এমনকি নিরাপত্তার খাতিরে বিভিন্ন জায়গায় কিছু ট্রেন বন্ধও করা হয়েছে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের একজোড়া কমিউটার ট্রেন গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ আছে। ঈশ্বরদী-রাজশাহী-রোহনপুর রুটের একজোড়া লোকাল ট্রেন এবং ময়মনসিংহ-ভুয়াপুর চলাচলকারী লোকাল ট্রেন ১৫ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ আছে। ঢাকা-তারাকান্দা রুটে চলাচলকারী আন্তঃনগর যমুনা এক্সপ্রেসের রুট সংক্ষিপ্ত করেছে রেলওয়ে, যা ১৫ ডিসেম্বর থেকে জামালপুর পর্যন্ত চালানো হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় শুক্রবার রাত থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় রাজশাহী-পার্বতীপুর রুটের উত্তরা এক্সপ্রেস।
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিবেদক ও সিলেট অফিস]