মধ্যাঞ্চলীয় ব্যুরো
প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২২ ২২:০২ পিএম
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২২ ১৪:৫২ পিএম
নিহত কলেজছাত্র নাঈম শেখ। ছবি: সংগৃহীত
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে ঝগড়া থামাতে গিয়ে পিটুনির শিকার হয়ে নাঈম শেখ নামে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। টানা নয় দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার বিকেলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।
শনিবার নাঈমের মরদেহ
হোসেনপুর উপজেলার হোগলা কান্দি গ্রামে আনা হয়। তিনি স্থানীয় আব্দুর রশিদের ছেলে ও হোসেনপুর সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড
কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিলেন। স্বজনরা জানান,
পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে নাঈমের বিদেশ যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করা হয়েছিল। এখন আর তার বিদেশ যাওয়া হলো না।
এদিকে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে বিজয় নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি একই গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানান, নাঈম ও আমিনুল ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় হোগলা কান্দি বোর্ডের বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময়
নয়-দশজন মিলে তাদের ওপর হামলা চালায়। তারা রড দিয়ে নাঈম ও আমিনুলকে এলোপাতাড়ি পেটায়। এ সময় আত্মরক্ষার্থে চিৎকার শুরু করলে এলাকাবাসী তাদের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে।
হোগলা কান্দি বোর্ড বাজারের পল্লী চিকিৎসক আব্দুল মজিদ বলেন, ‘ওই দিন প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের পাঠানো হয়। সেখানে আমিনুলের অবস্থা ভালো হলেও নাঈমের অবস্থা ক্রমশ অবনতির দিকে যায়। এ কারণে তাকে কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে নাঈমকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
স্বজনরা জানান, মাস দেড়েক আগে শাহাব উদ্দিনের মুদি দোকান থেকে কেনাকাটার বিষয়ে ঝগড়া হয়। এ সময় শাহাব উদ্দিনের ছেলে জাহিদুলকে মারধর করে প্রতিপক্ষ রইছ উদ্দিনের ছেলে আলমগীর। ওই দিন নাঈম ঝগড়া থামানোর কারণে সেই থেকে আলমগীর ও শাহজাহান নাঈমের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে থাকে। এ নিয়ে নাঈমসহ মুদি দোকানদারকে হত্যার হুমকি দেয় প্রতিপক্ষ। এ জন্য মাসখানেক দোকান বন্ধ রাখে দোকানদার। তিনি এক মাস পালিয়ে থাকার পর আত্মরক্ষার্থে হোসেনপুর থানায় লিখিত সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
তারা অভিযোগ করেন, এ নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মীমাংসা করে দিলেও
পূর্ব ঘটনার জেরে হামলা চালিয়েছে আলমগীর ও তার সহযোগীরা।
হোসেনপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান টিটু বলেন, ‘নাঈম চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তার পিতা আব্দুর রশিদ নয়জনের নাম উল্লেখ করে ও পাঁচজনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে মামলা করেছেন। এটি এখন হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করে আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। হত্যার সঙ্গে জড়িত বিজয় নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
এদিকে হোসেনপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার শুক্রবার বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
প্রবা/এমআর