বেতাগী (বরগুনা) সংবাদদাতা
প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩:২৫ পিএম
করুণা গ্রামের তালবাড়ি খাল পারাপারে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে সেতু সংযোগ সড়ক তৈরির আগেই। ফলে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে স্থানীয়রা। শুক্রবার তোলা। প্রবা ফটো
দেশের উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগী উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের করুণা গ্রামের তালবাড়ি খাল পারাপারে নির্মিত হয়েছে একটি সেতু। পরিহাসের বিষয়, সেতুর দুই পারে তৈরি হয়নি সংযোগ সড়ক। অপরিকল্পিতভাবে সেতু নির্মাণের ফলে যাতায়াতে আগের সেই দুর্ভোগই পোহাচ্ছেন স্থানীয় জনসাধারণ।
সরেজমিনে দেখা যায়, তালবাড়ি খালের ওপর নির্মিত সেতুতে ওঠার জন্য দুপাশেই কোনো রাস্তা নেই। নেই বাঁশের সাঁকোর ব্যবস্থা। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ ৮ মাস ধরেই চলছে এ এলাকার মানুষের দুর্ভোগ। এ ছাড়াও খালের তুলনায় সেতু ছোট হওয়ায় সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হলেও বর্ষায় পানির চাপে তা ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বেতাগী সদর, মোকামিয়া মাদ্রাসা ও মোকামিয়া মাদ্রাসা বাজারসহ আশপাশের এলাকার মানুষ সেতুর সংযোগ সড়কের অভাবে অন্য পথে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন। জনদুর্ভোগের চরম পর্যায়ে পৌঁছানো সেতুটির সংযোগ সড়ক দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন করুনা গ্রামের মানুষ।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে পণ্য পরিবহন ও মানুষের যাতায়াতের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু-কালভার্ট কর্মসূচির আওতায় ১৩ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি ৮৪ লাখ ৯৫ হাজার ১৪৯ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়। বরগুনার পরীর খালের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স শাহ নেওয়াজ সেলিম ২০২২ সালের ১৫ মার্চ এ কাজটির কার্যাদেশ পায়। একই সালের ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার সময়সীমা থাকলেও এখন পর্যন্ত নির্মিত সেতুটির দুই পাশে রাস্তা নির্মাণ করা হয়নি। সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়ক ছাড়াই প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয়। ফলে সেতুটি এখানকার মানুষের চলাচলে কোনো কাজেই আসছে না।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্থানীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে কর্মরত একজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরেজমিনে পরিদর্শন না করেই প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠান। আবার কারও কারও ব্যক্তিগত স্বার্থেও রাস্তাঘাট ছাড়া সেতু নির্মাণ করা হয়। এতে সরকারের অনেক টাকা অপচয় হচ্ছে।
বেতাগী উপজেলা প্রকৌশলী রইসুল ইসলাম বলেন, প্রস্তাব পাঠানোর আগে সরেজমিনে পরিদর্শন না করে সেতু নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই। তবুও হয়েছে সেতু। এ কারণে সরকারের প্রায় কোটি টাকা অপচয় হচ্ছে।
বেতাগী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) জিএম অলিউল ইসলাম বলেন, দ্রুতই অগ্রাধিকারভিত্তিতে মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন হবে।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আহমদ বলেন, ‘মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে সেতুটির সঙ্গে রাস্তার সংযোগ স্থাপনে মাটি ভরাটের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’