গণশুনানিতে অভিযোগ
রাজশাহী অফিস
প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৩৪ পিএম
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৩৫ পিএম
পুলিশ সার্জেন্ট ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কর্মকর্তারা ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে বলে অভিযোগ করেছেন রাজশাহী অঞ্চলের বিভিন্ন পরিবহনের চালক। তারা জানিয়েছেন, রাস্তায় তারা অসহায়।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজশাহী বিআরটিএ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে চালকরা বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার।
আবদুল মমিন নামের এক বাসচালক কান্না জড়িত কণ্ঠে অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার বাড়ি নাটোর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে। রাজশাহীতে আসা-যাওয়া করতে ৩০০ টাকা খরচ হয়। আমি প্রথম লাইসেন্স করি ২০১৪ সালে। লাইসেন্সের বয়স ১০ বছরের বেশি। এখন আমার ভারী লাইসেন্স প্রয়োজন। দুইমাস আগে ব্যাংক ড্রাফটসহ সব প্রসেস শেষ করে লাইসেন্স করতে গেলাম। আমাকে বলল, লাইসেন্স অনলাইন হয়নি, জিরো হয়ে গেছে। আবার নতুন করে লাইট লাইসেন্স নিতে হবে। এতে আমি ভারী গাড়ি চালাতে পারব না। সেজন্য চার মাস হলো আমার চাকরি চলে গেছে। আমি পরিবার নিয়ে কষ্টের মধ্যে আছি। আমি ঋণগ্রস্থ।’
উপস্থিত সকল ড্রাইভার মমিনের অভিযোগের সমর্থন জানান। অভিযোগ আমলে নিয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান মমিনকে একদিনের মধ্যেই লাইসেন্স প্রদানের নির্দেশ দেন।
মো. জনি নামের এক ট্রাকচালক বলেন, ‘বিআরটিএ’র দেওয়া ই-ড্রাইভিং কার্ড পেয়েছি ৬ আগস্ট। এখনও স্মার্টকার্ড পাইনি। এটা ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স। সার্জেন্টকে দেখালে বলে, এটা দিয়ে গাড়ি চালানো যাবে না। সার্জেন্টের সঙ্গে কথা বলা যায় না। সার্জেন্ট বলে, যত কথা বলব, ততো ২০০ টাকা করে জরিমানা বাড়বে। মামলা লাগিয়ে দেয়, তা না হলে রাস্তায় টাকা নেয়। রাস্তায় আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি স্যার।’
বিআরটিএর রাজশাহী সার্কেলের কর্মকর্তারা চেয়ারম্যানকে জানান, লাইসেন্স কার্ড প্রস্তুতের দায়িত্বে থাকা আগের প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটির কারণে রাজশাহীর প্রায় ৩৫০ জন চালক এমন দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন।
পরে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, যারা সত্যিকার অর্থে নিয়ম মেনে লাইসেন্স নিয়ে ড্রাইভিং করতে চান তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল প্রকার সহযোগিতা নিশ্চিত করেত হবে।
গণশুনানিতে রাজশাহী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক, রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন চৌধুরী, রাজশাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফরিদ আলী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
গণশুনানিতে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সাবিহা সুলতানা, বিআরটিএ’র রাজশাহী সার্কেলের উপ-পরিচালক (ডিডি) এসএম কামরুল হাসান ও সহকারী পরিচালক (এডি) মোশাররফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।