শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২:৪৩ পিএম
নাশকতার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত সাতজন। প্রবা ফটো
গাজীপুরে রেললাইন কেটে নাশকতার ঘটনায় গ্রেপ্তার সাতজনের মধ্যে তিনজন দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন জান্নাতুল ইসলাম, মেহেদী হাসান ও শাহানুর আলম। অন্য চার আসামিকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। চারজনের মধ্যে একজন হলেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান আজমল ভূঁইয়া। বাকি তিনজন হলেন সাইদুল ইসলাম, জুলকারনাইন হৃদয় ও সোহেল রানা।
ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুলহাস উদ্দিনের আদালত শুনানি শেষে তাদের এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ঢাকা রেলওয়ে থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগের উপকমিশনার (দক্ষিণ) নাজির আহমেদ খান জানান, সাত আসামিকে গ্রেপ্তারের পর রবিবার আদালতে হাজির করা হয়। তাদের মধ্যে জান্নাতুল ইসলাম, মেহেদী হাসান ও শাহানুর আলম আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে রিমান্ডে চায় পুলিশ। তদন্ত কর্মকর্তা পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করলেও আদালত তিন দিন মুঞ্জর করেন।
পুলিশ জানায়, তিন আসামি পৃথক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শাহানুর আলম ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুলহাস উদ্দিনের আদালতে, মেহেদী হাসান সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে এবং জান্নাতুল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মুজাহিদুল ইসলামের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
গত ১৩ ডিসেম্বর ভোর সাড়ে ৪টায় ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের শ্রীপুর উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়নের বনখড়িয়া (চিলাই রেলব্রিজ) এলাকায় নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের রৌহা গ্রামের মোছলেম উদ্দিনের ছেলে কাঁচামাল ব্যবসায়ী আসলাম নিহত হন এবং ১০ জন আহত হন। এর আগে মঙ্গলবার রাতের কোনো একসময় দুর্বৃত্তরা গ্যাস কাটার দিয়ে ২০ ফুট রেললাইন কেটে বিচ্ছিন্ন করে রাখে। ট্রেন পড়ে গেলে প্রায় ৬০০ মিটার রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ ঘটনায় রেল পুলিশ মামলা করে। মামলার এজাহারে বলা হয়, অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশে নাশকতা করে ট্রেনের যাত্রীদের হত্যা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের ব্যাপক ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে রেললাইন গ্যাস কাটার দিয়ে কেটে বিচ্ছিন্ন করে রাখে। পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে বলছে, তারা সবাই বিএনপির নেতাকর্মী। সরকারবিরোধী আন্দোলনকে চাঙ্গা করতে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের নজর পেতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু ট্রেনটি ব্রিজের ওপর ওঠার আগেই লাইনচ্যুত হয়ে গড়িয়ে পড়ার কম হতাহত হয়েছে।