ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) সংবাদদাতা
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২:০৩ পিএম
রহস্যময় আগুনে পুড়ে যাওয়া আসবাবপত্র। সম্প্রতি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার পূর্ব দায়চারা গ্রামে। প্রবা ফটো
চোখের সামনে আগুনে পুড়ে যাচ্ছে ঘরের আসবাবপত্রসহ পোশাক। মুহূর্তের মধ্যে সেই আগুন আবার অদৃশ্য। এক-দুবার নয়, গত কয়েক মাসে একাধিকবার ঘটেছে এমন ঘটনা। রহস্যজনক এই আগুনের কূলকিনারা করতে পারছে না কেউ। এরই মধ্যে আগুন থেকে রক্ষা পেতে কবিরাজের ঝাড়ফুঁক, তাবিজ-কবচ, এমনকি মিলাদ ও দোয়া পড়িয়ে গরু জবাই করে খাওয়ানো হয়েছে গ্রামবাসীকে। কিন্তু তাতেও মেলেনি মুক্তি। আগুন আতঙ্কে এখন ঘরছাড়া দুটি পরিবার। ঘটনাটি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার পূর্ব দায়চারা গ্রামের বৃদ্ধ শাহাদাত উল্লাহর বাড়িতে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শুধু কাপড়-চোপড়ই নয়, আসবাবপত্রসহ সবকিছুতেই আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে। রাতের বেলায় নয়, দিনের আলোয় ঘটছে। শুধু তাই নয়, ফ্রিজের বরফ, কাচের সামগ্রী ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটছে। মাটির তলায় সিন্দুকে লুকিয়ে রাখা স্বর্ণ-গয়না এবং নগদ টাকাও লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছে।
এমন রহস্যজনক আগুন লাগার ঘটনায় দিশেহারা সত্তরোর্ধ্ব শাহাদাত উল্লাহ ও তার ভাই আবুল কাসেমের পরিবার। তারা জানান, গত ছয়-সাত মাস ধরে এভাবে আগুন জ্বলছে। কে জ্বালাচ্ছে, কীভাবে জ্বালাচ্ছে কিছুই দেখছেন না। তারা (অদৃশ্য কিছু) চোখের সামনেই আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছে।
প্রতিবেশী জাকির হোসেন বলেন, ‘জিন অদৃশ্য ক্ষমতা দিয়ে এমন আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে।’ স্থানীয় বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘দুই-তিন দিন আগে দুজন মহিলা ও এক শিশুর গায়ে আগুন লাগিয়েছে অদৃশ্য শক্তি। এ গ্রামে আর কোথায়ও এমন আগুন লাগার ঘটনা ঘটেনি।’
স্থানীয় মসজিদের ইমাম লিয়াকত আলী বলেন, ‘এমন ঘটনা বারবার ঘটতে থাকলে একসময় ঘরের জিনিসপত্র নিয়ে রাখা হয় মসজিদের ভেতর। রেহাই মেলেনি সেখানেও। মসজিদে রাখা জিনিসপত্রেও আগুন লেগে যাচ্ছে। আমি নিজেও আগুন জ্বলতে দেখেছি। কয়েকবার নিভিয়েছি। কে বা কারা আগুন লাগাচ্ছে, তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা ও রহস্য। তবে ধারণা করছি, জিনের কাজ হতে পারে।’
জানতে চাইলে ফরিদগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার কামরুল হাসান বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আগুন লাগার কোনো সূত্রপাত খুঁজে পাইনি। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পারি, অদৃশ্যভাবে কে বা কারা আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’