রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:৫৮ পিএম
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২:০০ পিএম
রাঙ্গুনিয়ায় সড়কে বাইসাইকেল চালিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালান তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি। প্রবা ফটো
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাইকেল চালিয়ে প্রচারণা শুরু করেছেন। চট্টগ্রাম-৭ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. হাছান মাহমুদ সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে থেকে সাইকেলে চড়ে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক দিয়ে মরিয়ম নগর চৌমুহনীতে গিয়ে পথসভার মধ্য দিয়ে যাত্রা শেষ করেন। এর আগে সত্যপীরের মাজার এবং নিজের পিতা-মাতাসহ মুরব্বিদের কবর জিয়ারত করেন তিনি।
পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন নিয়ে জনগণের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে বিএনপিসহ দেশে-বিদেশে যারা ষড়যন্ত্র করেছিল তারা বেলুনের মতো চুপসে গেছে। এখন শক্তিশালী ভিটামিন ট্যাবলেট দিয়েও বিএনপিকে দাঁড় করানো যাচ্ছে না। ৭ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সারা দেশের মতো রাঙ্গুনিয়ার লাখো মানুষ নিয়ে আমরা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেব।
নির্বাচন নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করেছিল, তারা এখন গর্তের মধ্যে ঢুকেছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যখন ইঁদুরকে দৌড়ানো হয়, ইঁদুর তখন গর্তে ঢুকে পড়ে। জনগণ বিএনপিকে ধাওয়া করেছে, দৌড়ানি খেয়ে গর্তের মধ্যে ঢুকেছে তারা। আপনারা যারা ইঁদুর ধাওয়া করেছেন তারা জানেন, ইঁদুর গর্তের ভেতর ঢুকে চোখ মেলে মেলে তাকায়। এখন বিএনপির রিজভী আহমেদ গর্তের ভেতর থেকে চোখ মেলে মেলে তাকান আর কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির কর্মসূচি হচ্ছে যানবাহন পোড়ানো। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি হতে পারে না। যারা আগুনসন্ত্রাস করে তাদের আমরা বর্জন করি, তাদের জনগণও বর্জন করেছে। রাঙ্গুনিয়ার মাটিতে তাদের স্থান নেই। রাঙ্গুনিয়ায় যারা ছিল তারাও গর্তে প্রবেশ করেছে। জনরোষ থেকে রক্ষা পেতেই তারা এখন গর্তে ঢুকেছে।
পথসভায় তিনি আরও বলেন, নির্বাচন যাতে অনুষ্ঠিত না হয়, সেজন্য অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিল। বিএনপি-জামায়াত মনে করেছে, আমরা নির্বাচন করতে পারব না। তারা বুঝতে পেরেছে, সমস্ত প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে জনগণের উৎসাহ উদ্দীপনায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যেভাবে প্রতিবার ভোটকেন্দ্রে গিয়ে আপনারা ভোট দিয়েছেন এবারও দ্বিগুণ উৎসাহে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে আপনাদের প্রতি অনুরোধ রইল।
সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ’৫৪ সালে সাইকেলে চড়ে নির্বাচনী প্রচারণা করেছিলেন। ’৫৪ সাল থেকেই আমাদের দলীয় প্রতীক নৌকা, আমি আজকে রাঙ্গুনিয়ার দলীয় কার্যালয় থেকে সাইকেল চালিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছি। নৌকায় চড়ে কর্ণফুলী নদী পার হয়েছি। যারা ‘বঙ্গবন্ধু : একটি জাতির রূপকার’ সিনেমা দেখেছেন, সেখানে নিশ্চয়ই দেখেছেন বঙ্গবন্ধু কীভাবে নৌকা এবং সাইকেলে চড়ে নির্বাচনের প্রচারণা করতেন। বঙ্গবন্ধুর সেই স্মৃতিকে স্মরণ করে আজ নৌকায় চড়েছি এবং সাইকেল চালিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছি।
নির্বাচনী এলাকার জনগণের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী হাছান বলেন, আমি প্রতিবারই আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি, কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর আমি সব মত ও পথের মানুষের এমপি হিসেবে কাজ করার চেষ্টা করেছি। কে কোন দলের সেটি দেখিনি। আমার কাছে যিনিই গেছেন, কাউকে নিরাশ করিনি। গত ১৫ বছর ধরে আমার দুয়ার সব মানুষের জন্য খোলা ছিল। এখন আমি আপনাদের দুয়ারে, আপনাদের কাছে বিনীত ফরিয়াদ, আপনারা দয়া করে আমার জন্য আপনাদের দুয়ারটি খুলে দেবেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে সারা দেশে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। দেশের অনেক উপজেলার চেয়ে বেশি উন্নয়ন আমাদের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ও বোয়ালখালী অংশে হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন না দিলে আপনারা আমাকে ভোট দিতে পারতেন না। আপনারা আমাকে নির্বাচিত করেছেন, তিনি আমাকে মন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন। সেই দায়িত্বে থাকার কারণে আমার পক্ষে এখানে উন্নয়ন করা সম্ভবপর হয়েছে, অন্যথায় এত উন্নয়ন করা সম্ভবপর হতো না। আপনাদের সেই ভালোবাসার প্রতিদান আমি দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
এসময় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম চিশতি, মো. শাহজাহান সিকদার, কামরুল ইসলাম চৌধুরী, নজরুল ইসলাম তালুকদার, মুহাম্মদ আলী শাহ, ইফতেখার হোসেন বাবুল, আকতার হোসেন খান, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সচিব ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, গিয়াস উদ্দিন খান স্বপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।