সিজারের পর প্রসূতির মৃত্যু
কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৮:৫৪ পিএম
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:১৬ পিএম
নিরাময় নার্সিং হোম অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। প্রবা ফটো
ভুল অস্ত্রোপচারের পর প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় আলোচিত গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ‘নিরাময় নার্সিং হোম অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ অভিযান চালিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ সময় নিয়মনীতি না মেনে সেবার নামে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ক্লিনিকের সব কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। এ ছাড়াও জাহানারা সেবা ক্লিনিক নামের অন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়।
এ সময় জেলা সিভিল সার্জন ডা. জিল্লুর রহমান, কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মাহমুদুল হাসান, আরএমও আমিনুল ইসলামসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রবিবার প্রতিদিনের বাংলাদেশে ‘কাশিয়ানীতে সিজারের পর প্রসূতির মৃত্যু, দুই লাখ টাকায় দফারফা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। পরে বিষয়টি নজরে আসে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘গণমাধ্যমের সুবাদে প্রসূতি মৃত্যুর বিষয়টি আমাদের নজর আসে। পরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওই ক্লিনিকে অভিযান চালানো হয়। নিয়মনীতি না মানা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকা ও সেবার নামে রোগীর সঙ্গে প্রতারণা করায় ভোক্তা সংরক্ষণ আইনে ওই ক্লিনিককে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চিকিৎসাসহ সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
গোপালগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘প্রসূতি মারা যাওয়ার ঘটনায় আমরা ক্লিনিক পরিদর্শন করি। সেখানে দেখি ক্লিনিক মালিক আসলামুজ্জামান কামাল নিজেই অজ্ঞান ও অস্ত্রোপচার করেন। তার আসলে এ ধরনের অস্ত্রোপচার করার কোনো এখতিয়ার নেই। যা রোগীদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। তবে মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে জেল দেওয়া হয়নি। তবে ১ লাখ জরিমানা ও সাময়িকভাবে ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’
১৫ ডিসেম্বর উপজেলার রামপুরা গ্রামের মাসুরা বেগমকে ওই ক্লিনিকে সিজারের জন্য ভর্তি করা হয়। দুপুর ২টায় তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। ক্লিনিকমালিক ও ডা. আসলামুজ্জামান অস্ত্রোপচার করেন। ১৫ মিনিট পর জন্ম নেওয়া নবজাতককে অপারেশন থিয়েটার থেকে জীবিত বের করা হয়। পৌনে ১ ঘণ্টা পর মাসুরা বেগমকে অচেতন অবস্থায় অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে কেবিনে আনা হয়। দীর্ঘ সময় পরও তার জ্ঞান না ফেরায় স্বজনদের সন্দেহ হয়। পরে স্বজনরা তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়। ঘটনার পর ওই রাতেই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ প্রসূতির স্বজনদের ২ লাখ টাকা দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়।