× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বিজয় দিবসের ছুটিতে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের ঢল

নুপা আলম, কক্সবাজার ও আবুল হাসান, মোংলা (বাগেরহাট)

প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:২৪ পিএম

আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৪২ পিএম

বিজয় দিবসের ছুটিতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে উপচে পড়া ভিড়। প্রবা ফটো

বিজয় দিবসের ছুটিতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে উপচে পড়া ভিড়। প্রবা ফটো

‘কক্সবাজার মানেই অন্যরকম ভালো লাগা। যতবার আসি ততবারই আসতে মন চায়। বাচ্চাদের স্কুলও বন্ধ। তাই বিজয় দিবসের ছুটিতে কংক্রিটের জঙ্গল ছেড়ে সমুদ্রে গা ভেজানোর আনন্দ।’ বলছিলেন কক্সবাজারে বেড়াতে আসা মিথিলা জাহান। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে বালিয়াড়িতে পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দে মেতেছিলেন খুলনা থেকে আসা ব্যাংকার মুরাদ হোসেন। তার সঙ্গে এসেছেন পরিবারের ৯ সদস্য। মুরাদ বলেন, অক্টোবর মাস থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে আসব ঠিক করেছিলাম। কিন্তু হরতাল-অবরোধের কারণে বারবার তারিখ পরিবর্তন করেও আসা হয়নি। বিজয় দিবসের ছুটি পেয়েছি বলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেড়াতে এসেছি। খুবই ভালো লাগছে, প্রতিটি মুহূর্ত আনন্দে যাচ্ছে।

হালকা শীতে সমুদ্রের পাড়ে বসে মৃদু রোদ উপভোগ করাটা বেশ আরামের। তাই সারা বছরের তুলনায় শীত মৌসুমে কক্সবাজারে পর্যটকদের পদচারণা বেশি থাকে। যদিও এ বছর হরতাল-অবরোধের কারণে মৌসুমের শুরুতে পর্যটকের তেমন ভিড় দেখা যায়নি। তবে বিজয় দিবসের ছুটিতে কক্সবাজারে ভিড় করেছেন লাখো মানুষ। সব বয়সের মানুষই আনন্দে মেতেছেন সাগরতীরে।

রাজশাহী থেকে বেড়াতে আসা নুসরাত জাহান বলেন, মাছের অ্যাকুরিয়াম দেখেছি, শুঁটকি মহাল দেখেছি। এখন সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে আছি। এখানে গোসল করব। আর বাকি সময়টাতে মেরিন ড্রাইভ, ইনানি ও পাতুয়ার টেক ঘুরতে যাব। এভাবেই পরিকল্পনা করে এসেছি। আরেক পর্যটক সিয়াম আহমেদ। তিনি বলেন, সমুদ্রের নোনাজলে বেশ ভালো লাগছে। গোসল করে বালিয়াড়িতে উঠে আসি, কিন্তু কিছুক্ষণ পর আবার নেমে পড়ি। এভাবে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গোসল করেছি। জল থেকে উঠতেই মন চায় না। মনে হয় গোসল করে সব ক্লান্তি দূর হয়ে যাচ্ছে।

এদিকে হোটেল-রেস্তোরাঁ ও যানবাহনে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ রয়েছে অনেক পর্যটকের। ইব্রাহীম কাদের নামের একজন পর্যটক বলেন, শনিবার সকালে কক্সবাজার এসে হোটেল রুম ভাড়া নিতে গিয়ে বিপদে পড়ে যাই। যে রুম গত বছর ৪ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়েছিলাম, এবার তা ১০ হাজার টাকা চাচ্ছে। হোটেল কর্তৃপক্ষ বলছে, থাকলে থাকেন না হয় চলে যান। এখন পর্যটকের অভাব নেই। আপনি রুম না নিলে পর্যটকের অভাব হবে না। শেষে ৭ হাজার টাকায় রুম ভাড়া নিতে বাধ্য হয়েছি। আরেক পর্যটক রুস্তম আলী। তিনি বলেন, হোটেল থেকে শুরু করে রেস্তোরাঁ বা যানবাহন- সব জায়গায় বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। দুই দিনের জন্য ২০ হাজার টাকা নিয়ে এসেছিলাম। এখন এই টাকা দিয়ে হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে পরিবারের কাছ থেকে আরও ১০ হাজার টাকা সংগ্রহ করেছি।

বিপুলসংখ্যক পর্যটক আসায় ট্যুরিস্ট পুলিশকে তৎপর দেখা গেছে। পুলিশ সদস্যদের সৈকতের ৩টি পয়েন্টে হাঁটাহাঁটি করার পাশাপাশি পর্যটকের সমস্যার কথা শুনতে দেখা গেছে। কক্সবাজার জোনের উপপরিদর্শক প্রদীপ চক্রবর্তী বলেন, বিজয় দিবসের ছুটিতে লাখো পর্যটকের সমাগম হয়েছে কক্সবাজার সৈকতে। তাই পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বিক টহলের পাশাপাশি নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে বেড়াতে এসে অনেক পর্যটক বাচ্চা কিংবা মোবাইল ফোন হারিয়ে ফেলছে, যা দ্রুত উদ্ধার করে হস্তান্তর করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

তিনি বলেন, পর্যটকদের হয়রানির কোনো অভিযোগ পেলে তা দ্রুত নিরসন করা হচ্ছে। এজন্য জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন। যিনি সার্বক্ষণিক সৈকত এলাকায় রয়েছেন। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছেন তিনি।

সুন্দরবনে পর্যটকের ঢল

বিজয় দিবসের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে সুন্দরবনে। শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সুন্দরবনের করমজলে সবচেয়ে বেশি পর্যটক ভ্রমণ করেছেন। এদিন করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে প্রায় দুই হাজার পর্যটক আসেন, যেখানে শুক্রবার এসেছিলেন প্রায় দেড় হাজার জন। চলতি মাসের মধ্যে শুক্র ও শনিবার এই দুই দিনই সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসেন করমজলে। এ মাসের বিগত দিনগুলোতে করমজলে পর্যটকদের আগমনের সংখ্যা ছিল দৈনিক গড়ে প্রায় তিনশ।

মোংলা থেকে সবচেয়ে কাছে হওয়াতে করমজলেই অন্যান্য স্পটের তুলনায় দর্শনার্থীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে বলে জানান করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির। তিনি বলেন, তবে ১৬ ডিসেম্বর ছুটির দিনে করমজলের পাশাপাশি পর্যটক বেড়েছে হাড়বাড়িয়া, নীলকমল, হিরণপয়েন্ট, কটকা, কচিখালী ও আন্ধারমানিকসহ অন্যান্য পয়েন্টেও।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য মোংলায় উন্মুক্ত রাখা হয়েছে নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের দুটি যুদ্ধজাহাজ। নৌবাহিনীর দিগরাজ ঘাঁটিতে ‘বানৌজা তুরাগ’ ও কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের সদর দপ্তরে ‘বিসিজিএস মুনছুর আলী’ দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উন্মুক্ত রাখা হয়। এ সময় যুদ্ধজাহাজ দুটি দেখতে ভিড় জমান বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নানা বয়সের মানুষ।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা