× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ট্রেনে নাশকতায় আতঙ্কিত গ্রামবাসী, শাস্তি চান প্রকৃত অপরাধীর

রায়হানুল ইসলাম আকন্দ, শ্রীপুর (গাজীপুর)

প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৮:৪৩ পিএম

আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:৫৫ পিএম

ট্রেনে নাশকতায় আতঙ্কিত গ্রামবাসী, শাস্তি চান প্রকৃত অপরাধীর

গাজীপুরে ট্রেনে নাশকতা দেখার পর আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে নজর রেখে প্রকৃত দোষীর কঠিন বিচারও চেয়েছেন তারা। এদিকে ঘটনার পর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের নির্জন স্থানগুলোতে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে রেলওয়ে ঢাকার পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন।

শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বনখড়িয়া নাশকতা এলাকায় জমিতে ধান কাটছিলেন কৃষক মহির উদ্দিন। তিনি বলেন, আমরা বাড়িতে বসবাস করতেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেউ আমাদের কোনো সমস্যা করছে না। এত বড় ঘটনায় আমারা ভয় পেয়েছি। ঘটনা দেখার পর থকে মনে হলেই আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। যদি ট্রেনটি চিলাই ব্রিজের ওপর উঠে যেত তাহলে অনেক যাত্রী মারা যেত।

ঘটনার পর থেকে এ গ্রামে ২৪ ঘণ্টা পুলিশের নিরাপত্তা রয়েছে বলে তিনি জানান। বনখড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দাঁড়িয়ে রোদ পোহাচ্ছিলেন কৃষক আবুল হোসেন ও আকতার হোসেন। নাশকতার বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ক্ষেপে যান তারা। তারা বলেন, তারা তাদের বাড়িতেই আছেন। অথচ সাংবাদিকেরা লিখেছে বনখড়িয়া গ্রাম পুরুষশূন্য। তবে এই নাশকতা যারা করেছে তাদের চিহ্নিত করে কঠিন বিচারের দাবি জানান দুই কৃষক।

বনখড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম স্থানীয় একটি সিগারেট কারখানায় চাকরি করেন। তাকে বেশ আতঙ্কিত দেখা গেছে। শুক্রবার অফিস বন্ধ থাকায় তিনি বাড়িতেই ছিলেন। তিনি ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা জানান, তারা পরিবারের সবাই চাকরির করেন। ঘটনার দিন তারা সবাই অফিসে ছিলেন। অফিসে যাওয়ার পর শুনতে পান ট্রেনে নাশকতার কথা।

বাড়িতে ধান শুকাচ্ছিলেন গৃহিণী নাসিমা আক্তার। তিনি জানান, এখনও আশপাশের এলাকা থেকে মানুষ ঘটনাস্থল দেখতে আসে। ঘটনাটি যারা ঘটিয়েছে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তাদের চিহ্নিত করে কঠিন বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। তবে কোনো নিরপরাধ মায়ের সন্তান যেন হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে বিশেষ নজর রাখার অনুরোধ জানান তিনি। বনখড়িয়া জামে মসজিদের ইমাম নাজমুল আলম জানান একই দাবি।

গত বুধবারের এ ঘটনার পর অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। ঘটনার তৃতীয় দিন গিয়ে রেললাইন সংস্কারের কাজ করতে দেখা গেছে প্রকৌশল বিভাগের কর্মচারীদের। তাদের পাশাপাশি ঘটনার তদন্তের দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা পরিদর্শনে আসছেন। তারা কথা বলছেন স্থানীয় লোকদের সঙ্গে। চেষ্টা করছেন প্রকৃত দোষীকে শনাক্ত করতে। স্থানীয়রা বলছেন, ২০১৪ সালে বনখড়িয়া থেকে দেড় কিলোমিটার উত্তরে এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। তারা বলছেন, ঘটনাটি খুবই আতঙ্কের হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা তদন্ত কর্মকর্তরা গ্রামের কাউকেই হয়রানি করছে না এবং প্রত্যেক বাড়ির পুরুষ সদস্যরা বাড়িতে থেকে নিয়মিত দৈনন্দিন কাজ করে যাচ্ছেন। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় আধা কিলোমিটার অংশে সব ট্রেন একেবারেই ধীর গতিতে চালানো হচ্ছে।

এ ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক হয়নি। শুক্রবার দুপুর ১২টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে রেলওয়ে পুলিশের (ঢাকা অঞ্চল) সহকারী সুপার মাজহারুল হক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা কাজ করছি। আমাদের সঙ্গে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও সম্মিলিতভাবে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে কাজ করছে। কোনো নিরীহ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয় সেদিকটায় আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।

পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রেলওয়ে পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। চলন্ত ট্রেনে একজন অফিসারসহ পাঁচজন করে পুলিশ কাজ করছে। রাতের বেলায় টর্চ লাইটসহ নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে ট্রেনে। সঙ্গে বিশেষ টহলের ব্যবস্থাও আছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে এই নিরাপত্তা শুরু হয়েছে।

গত বুধবার ভোর সাড়ে ৪টায় ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বনখড়িয়া (চিলাই ব্রিজ) এলাকায় নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ থেকে আসা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় একজন নিহত হয় এবং ১০ জন আহত হন। এর আগে মঙ্গলবার রাতের কোনো একসময় দুর্বৃত্তরা গ্যাস কাটার দিয়ে রেললাইন কেটে রাখে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা নাশকতা করতে রেললাইনের একটি অংশ কেটে রেখেছিল। এতে প্রায় ৬০০ মিটার রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা