চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৮:৩১ পিএম
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:০৩ পিএম
বগুড়ার একটি বাজার। ফাইল ফটো
দুই দিন শূন্য থাকার পর দেশের ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) দেশি পেঁয়াজে সয়লাব হয়ে গেছে এই পাইকারি বাজার। আড়তদাররা বলছেন, মঙ্গলবার রাতে খাতুনগঞ্জে ১৫ থেকে ২০ গাড়ি মুড়িকাটা পেঁয়াজ এসেছে। চীন, পাকিস্তান থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ খাতুনগঞ্জে আসছে। সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় পেঁয়াজের দামও নিম্নমুখী।
চার দিন আগে শনিবার যেখানে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২০০-২২০ টাকায়, তা বুধবার খাতুনগঞ্জে বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকা। কেজিতে অন্তত ৩০ টাকা কমে চীন থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। বাজারে নতুন আসা মুড়িকাটা পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ী আল আরব বাণিজ্যালয়ের পরিচালক মো. মাহফুজুল আলম রুবেল প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ছে। মঙ্গলবার রাতে প্রায় ২০ ট্রাক মুড়িকাটা পেঁয়াজ ঢুকেছে। একই সময়ে চীন, পাকিস্তান থেকে আমদানি করা পেঁয়াজও আসছে। তাই বাজারে এখন দামও অনেক কম। দাম কমলেও এখন বাজারে ক্রেতা নেই।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৬ নভেম্বর থেকে এই পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে চীন এবং পাকিস্তান থেকে ৩৭১ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। বুধবার পাকিস্তান থেকে ৫৮ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে বলে জানিয়েছে উদ্ভিদ সংঘ নিরোধ চট্টগ্রাম কার্যালয়।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপকমিশনার বদরুজ্জামান মুন্সি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে চীন ও পাকিস্তান থেকে কিছু পেঁয়াজ আসছে। গত ১৫ দিনে প্রায় ৩৭১ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়। বন্দর দিয়ে এখন যেসব পেঁয়াজ আসছে। সেগুলো যাতে দ্রুত বাজারে যেতে পারে সেজন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুল্কায়ন করা হচ্ছে।
উদ্ভিদ সংঘ নিরোধ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, বুধবার পাকিস্তান থেকে আরও ৫৮ মেট্রিক টন পেঁয়াজ এসেছে। এ নিয়ে গত তিন দিনে ওই দেশ থেকে ১১৬ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এর আগে সোমবার আরও ৫৮ জন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। তার আগের দিন রবিবার চীন থেকে পেঁয়াজ এসেছে ১৬৮ মেট্রিক টন।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা এসব পেঁয়াজের শুল্কায়ন তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তিনটি প্রতিষ্ঠান চার দফায় এই ৩৭১ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করে। এর মধ্যে ৫৮ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করে সিদ্দিক অ্যান্ড সন্স। গত ২৬ নভেম্বর পেঁয়াজগুলোর শুল্কায়ন করা হয়। এরপর ২ ডিসেম্বর আরও ৫৮ মেট্রিক টন পেঁয়াজের শুল্কায়ন করা হয়। এই পেঁয়াজগুলো আমদানি করে মেসার্স রফিক ট্রেডার্স। একই সময়ে ২২৬ টন পেঁয়াজ আমদানি করে আল্লাহর রহমত স্টোর। গত ৩ ডিসেম্বর পেঁয়াজগুলোর শুল্কায়ন করা হয় এবং সর্বশেষ ৫ ডিসেম্বর আরও ২৯ মেট্রিক টন পেঁয়াজের শুল্কায়ন করা হয়। এই পেঁয়াজগুলো আমদানি করেছে মেসার্স রফিক ট্রেডার্স।
তিনটি প্রতিষ্ঠানের আমদানি করা এসব পেঁয়াজের শুল্কায়ন মূল্য ছিল ৪৭ সেন্ট থেকে সর্বোচ্চ ৫৫ সেন্ট। প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতি ডলার ১১২ টাকায় আমদানি ব্যয় পরিশোধ করে। সেই হিসাবে এসব পেঁয়াজের আমদানি মূল্য ছিল ৫৩ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৬১ টাকা। এই পেঁয়াজই এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়।