নোমান আল মাহমুদ হলফনামা বিশ্লেষণ
চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:১৩ পিএম
নোমান আল মাহমুদ। প্রবা ফটো
চট্টগ্রাম-৮ আসনে উপনির্বাচনে জয়ী হন তিনি। সব মিলে দায়িত্ব পালন করেছেন সাত মাসের বেশি। এর মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে। এবারের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ ভরসা রেখেছে তার ওপর। দলীয় মনোনয়ন পেয়ে হলফনামা জমা দিয়েছেন প্রার্থী। তবে সেখানে লিখেছেন-‘আমি ইতোপূর্বে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হই নাই’।
নৌকার এই প্রার্থীর নাম নোমান আল মাহমুদ। তিনি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর যুবলীগের সাবেক সভাপতি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জাসদ নেতা মঈন উদ্দীন খান বাদল। এক বছরের মাথায় তার মৃত্যুর পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ। তিন বছরেরও বেশি সময় দায়িত্ব পালনের পর তিনিও মারা যান। এরপর চলতি বছরের এপ্রিলে ওই আসনের উপনির্বাচনে দলীয় মনোয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নোমান আল মাহমুদ।
দলীয় মনোনয়ন পেয়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে অন্য প্রার্থীদের মতো তিনিও জমা দিয়েছেন হলফনামা। তবে গত উপনির্বাচনের হলফনামায় ৫ নম্বর পৃষ্ঠার ৭ (ক)’তে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি ইতোপূর্বে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হই নাই’। ওই নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে শপথ নেন তিনি। কিন্তু দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য দেওয়া হলফনামায়ও ৫ নম্বর পৃষ্ঠার ৭(ক)’তে একইভাবেই লিখেছেন, তিনি ইতোপূর্বে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হননি!
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোমান আল মাহমুদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ওখানে লেখা ছিল আমি সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়েছি কিনা। কিন্তু আমি নির্বাচিত হয়েছি উপ নির্বাচনে। এই কারণে আমি নির্বাচিত হইনি লিখেছি।’
সাত মাসের ব্যবধানে সম্পদ বেড়েছে নোমান ও তার স্ত্রীর
সংসদ সদস্য হওয়ার সাত মাসের মধ্যে নোমান ও তার স্ত্রীর বেড়েছে টাকার পরিমাণ। বর্তমানে নোমানের টাকার পরিমাণ ১৯ লাখ ৭৫ হাজার ৭৩১ টাকা এবং স্ত্রীর নামে টাকা আছে ২৯ লাখ ৭ হাজার ৪১৪ টাকা। ৭ মাস আগে নোমানের টাকা ছিল ১৭ লাখ ৯৬ হাজার ৬৯২ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ছিল ২০ লাখ ১৬ হাজার ৪১৪ টাকা। মে মাসে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে তিনি সম্মানি ভাতা গ্রহণ করেছেন ৯৫ হাজার ৮০৬ টাকা।
ব্যাংকে জমা নোমানের কমেছে, স্ত্রীর বেড়েছে আড়াইগুণ
সাত মাস আগে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নোমানের জমা ছিল ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা আর স্ত্রীর নামে ছিল ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তবে বর্তমানে নোমানের জমা আছে ৭ হাজার ৬৪৯ টাকা আর স্ত্রীর আড়াইগুণ বেড়ে জমা হয়েছে ৮ লাখ ৩৯ হাজার টাকা।
নোমানের বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার রয়েছে ৩৬ হাজার ৬৮৭ টাকা। আগে ছিল ৬০ হাজার টাকার। এ ছাড়া, তার নিজের নামে দেড় লাখ টাকার স্বর্ণালংকার, ৫০ হাজার টাকার টিভি, ফ্রিজ ও ৫০ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। আর স্ত্রীর রয়েছে শুধু ৪০ তোলা সোনা।
স্ত্রীর অন্যান্য ব্যবসার মূলধন শূন্য থেকে ২০ লাখ
গত উপনির্বাচনে হলফনামায় নোমান তার ব্যাংক হিসাবে দেখিয়েছিলেন ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা আর স্ত্রীর হিসাবে ছিল ‘শূন্য’। আর এবারের হলফনামায় নোমানের হিসাবে ওই অঙ্ক অপরিবর্তিত থাকলেও স্ত্রীর হিসাবে দেখানো হয়েছে ২০ লাখ টাকা।
বেড়েছে স্থাবর সম্পদ, বেশি স্ত্রীর
স্থাবর সম্পদের মধ্যে নোমানের নিজের নামে কোনো কৃষি জায়গা-জমি বা সম্পদ নেই। তবে তার স্ত্রীর নামে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা দামের ৩১৫ বর্গফুটের এজমালি স্থাপনাসহ ভিটাভূমি রয়েছে। আগের হলফনায় তাদের নামে কোনো দালানের কথা উল্লেখ না থাকলেও বর্তমানে নোমানের ৩৮২ বর্গফুট সমমানের আবাসিক দালান একটি এবং স্ত্রীর ৪ কাঠার ওপর চতুর্থ তলার একটি দালান রয়েছে।