পঞ্চগড় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:০৫ পিএম
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:৫১ পিএম
পঞ্চগড় সদর উপজেলায় এক হত্যা মামলার ১৬ আসামিকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়ায় চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে লক্ষ্য করে জুতা নিক্ষেপ করেছেন বাদী। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরের এ ঘটনায় বাদী মিনারা আক্তারকে আটক করেছে কোর্ট পুলিশ।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, ৫ ডিসেম্বর সদর উপজেলার সাহেবীজোত ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের সময় মারামারিতে আব্দুল মমিন নামে এক আসামির কিল-ঘুসিতে তার বড় ভাই ইয়াকুব আলীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছোট মেয়ে মিনারা আক্তার ওই দিন রাতে সদর থানায় বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। নিহতের বড় ছেলের স্ত্রী রওশনা আক্তার লিলিসহ বাদীপক্ষের স্বজনরা বলে, এমন একটি হত্যা মামলার আসামিদের কীভাবে, কোন আইনে জামিন দেওয়া হয়? আমরা এ ঘটনার ন্যায়বিচার চাই। এখানে টাকা বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। আমাদের মামলার বাদীকে পুলিশ আটক করে রেখেছে। তাকে ছেড়ে না দেওয়া পর্যন্ত আমরা আদালত থেকে যাব না।
জেলা জজ আদালতের আইনজীবী আবু মো. ইউনুস আলী লেলিন বলেন, ’নিম্ন আদালতের রায় যদি আমাদের পছন্দ না হয় তাহলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু বাদী আজকে বিচারককে লক্ষ্য করে জুতা ছুড়ে মেরেছেন। জুতাটি বিচারকের সামনে থাকা গ্লাসে লেগে নিচে পড়ে যায়। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এরপর যে আইনজীবী বা অন্য কাউকে মারা হবে না, তা মনে করা যায় না।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, ’কয়েক দিন আগে বাদীর বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। আজকে তাদের বাড়িতে কুলখানি হচ্ছে। এ অবস্থায় একটি হত্যা মামলায় সব আসামির জামিন দেওয়া কোনোভাবে কাম্য নয়। বিচারকের এমন আদেশে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে আদালত ত্যাগ করে চলে আসি। এই বিচারক এর আগে ছোট ঘটনায় কাউকে জামিন দিতেন না। এখন আবার বড় ঘটনায় আসামিদের জামিন দিয়েছেন। আজকে আদালত আমাদের কাছে নিহতের সুরতহালের প্রতিবেদন এবং মামলার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন চাচ্ছিলেন। এখন আমরা এসব কোথায় পাব?’
আসামিপক্ষের আইনজীবী রাকিবুত তারেক বলেন, ’আসামিদের ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন আদালত। মামলার ১ থেকে ৩ নম্বর আসামি আত্মসমর্পণ করেনি। যারা আত্মসমর্পণ করেছে তাদের অধিকাংশই নারী ছিল। এ ছাড়া আসামিদের বক্তব্য ছিল, ওই ব্যক্তি হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। সুরতহাল রিপোর্টের নথিতে এই তথ্য নেই। তাই সার্বিক বিবেচনা করে এই জামিন দেওয়া হয়েছে।‘
পঞ্চগড় আদালত পুলিশের পরিদর্শক জামাল হোসেন জুতা নিক্ষেপের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আদালতে বিচারক ও আইনজীবীদের বৈঠক চলছে। পরে যে সিদ্ধান্ত আসবে ওই অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব।