বেনাপোল (যশোর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:০০ পিএম
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:৩৫ পিএম
সৌরশক্তি চালিত চারা রোপণ যন্ত্র দিয়ে গাছ রোপন করা হচ্ছে। প্রবা ফটো
যশোরের শার্শা উপজেলার মিজানুর রহমান মিজান এবার চারা রোপণ যন্ত্র বানিয়েছেন, যা সৌরশক্তি দিয়ে চলে। যন্ত্রটি দিয়ে প্রতি ১৫ সেকেন্ডে মাটিতে খুঁড়ে একটি চারা লাগানো যায়। ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে এটি ব্যবহার করে সফলতা পেয়েছেন এই উদ্ভাবক। এর আগেও তিনি বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বানিয়েছেন যা গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, কৃষকদের মাঝে এই মেশিনের ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে দ্রুত গাছ লাগানো সম্ভব। মিজানুর রহমান মিজান বলেন, চলতি বছরে গ্রীষ্মকালে যশোরে মারাত্মক তাপদাহে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটে। অধিকাংশ গাছ মারা যায়। গাছের সংখ্যা কমে যেতে থাকে। আধুনিক যুগে কৃষকদের পক্ষে শাবল ও কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়ে গাছ লাগাতে অনেকটা অনিহা দেখা যায়। বিষয়টি মাথায় রেখে প্রযুক্তিনির্ভর বৃক্ষরোপণের জন্য তৈরি করেছেন সৌরবিদুৎ চালিত মাটি খোঁড়ার যন্ত্র। এই যন্ত্র দিয়ে মাত্র ১৫ সেকেন্ডে দেড় ফুট পর্যন্ত মাটি খুঁড়ে গাছ লাগানো যায়। একজন মানুষ এই যন্ত্র ব্যবহার করে দৈনিক ৩০০ থেকে ৪০০ গাছ লাগাতে সক্ষম হবেন।
উদ্ভাবক মিজান আরও বলেন, তার এই যন্ত্রটি তৈরি করতে প্রায় ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। একটি মোটর, ১২ ভোল্টের চারটি ব্যাটারি, কন্ট্রোলার ও সোলার প্যানেল ব্যবহৃত হয়েছে যন্ত্রটিতে। বাণিজ্যিকভাবে যন্ত্রটি তৈরি করে ব্যবহার উপযোগী করা গেলে কৃষকদের উৎপাদনখরচ আরও কম যাবে।
কৃষক বাবলুর রহমান বলেন, মিজান ভাই ইতিপূর্বে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে বেশ কিছু যন্ত্রপাতি আবিষ্কার করেছেন। সরকার থেকে তাকে সন্মামনা দেয়াও হয়েছে। তিনি যা তৈরি করেন তাতেই শতভাগ সফলতা পান। শার্শার আল মামুন নামে অপর এক কৃষক জানান, বেশ কয়েক দিন ধরে মিজান ভাই মাটি খোঁড়া যন্ত্রটি তৈরির জন্য পরিশ্রম করেছেন। অবশেষে পরীক্ষামূলকভাবে মেশিনটি চালু করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন। আমাদের যেখানে কোদাল দিয়ে গর্ত খুঁড়তে ১০ থেকে ২০ মিনিট সময় লাগে সেখানে মাত্র ১৫ সেকেন্ডে একটি বড় গর্ত খুঁড়ে গাছ লাাগনো যায়—এটি সিত্যই প্রশংশনীয়।
শার্শা উপজেলার সহকারী কৃষি অফিসার অমল কৃষ্ণ পাল জানান, মিজান যে মাটি খোঁড়ার যন্ত্র তৈরি করেছেন সেটি সৌরবিদ্যুৎচালিত ও পরিবেশবান্ধব। মাত্র ১৫ সেকেন্ডে এটি দিয়ে দ্রুত মাটি খুঁড়ে গাছ লাগানো যায়। আমরা এটা নিয়ে মিজানকে সব ধরনের সাপোর্ট দিচ্ছি, কৃষকদের মাঝে কিভাবে এই যন্ত্রের ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়।