× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পুলিশের ব্রিফিং

নোয়াখালীতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি : জেলে পরিচয়-বন্ধুত্ব, বেরিয়ে এসে ডাকাতি

নোয়াখালী প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:৪৭ পিএম

আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:২০ পিএম

পাঁচ ডাকাত ও তাদের দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রবা ফটো

পাঁচ ডাকাত ও তাদের দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রবা ফটো

নোয়াখালীর কবিরহাটে নৈশপ্রহরীকে হত্যা করে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনায় মামলার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডাকাতি হওয়া স্বর্ণ, রৌপ্য, নগদ টাকা এবং আগ্নেয়াস্ত্রসহ পাঁচ ডাকাত ও তাদের দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাহিনী জানিয়েছে, ডাকাতির মূল দুই পরিকল্পনাকারী একসময় জেলে ছিলেন। সেখানে তাদের পরিচয় ও বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। এরপর চলে দুজনের একের পর এক ডাকাতির পরিকল্পনা। সব শেষ তারা কবিরহাটে দুই স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি করে ৬০ ভরি স্বর্ণ-১৬০ ভরি রুপা এবং স্বর্ণ বিক্রির ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে এসব উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া তাদের কাছ থেকে একটি দেশীয় পাইপগান ও দুই রাউন্ড কার্তুজ, একটি গ্যাস সিলিন্ডার ও একটি পাইপ জব্দ করা হয়েছে। 

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম। 

গত ৮ ডিসেম্বর ভোরে কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের চাপরাশিরহাট বাজারে নৈশপ্রহরীকে হত্যার পর দুইটি স্বর্ণের দোকানে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা সংঘটিত হয়। এ সময় নৈশপ্রহরী শহিদুল্লাহকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে ডাকাতদল। ডাকাতি ও হত্যার ঘটনায় কবিরহাট থানায় একটি মামলা হয়। মামলা হওয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ও ডাকাতির মালামালসহ ৭ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, লক্ষীপুরের কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের চরপাগলা গ্রামের মৃত শহীদুল্লার ছেলে মো. নোমান, একই উপজেলার চর মার্টিন ইউনিয়নের পশ্চিম চর মার্টিন গ্রামের মোরশেদ আলমের বাড়ির মো. মোরশেদ আলমের ছেলে মো.সুজন হোসেন, হাজীরহাট ইউনিয়নের কৃঞ্চপুর গ্রামের ছৈয়াল বাড়ির সুভাষ চন্দ্র সরকারের ছেলে কৃঞ্চ কমল সরকার, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার নদনা ইউনিয়নের জগজীবনপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে মো. শাহাদাত হোসেন, একই উপজেলার বজরা ইউনিয়নের মুসলিম গ্রামের হাজী বাড়ির মো. সোলেমানের ছেলে মো. সাদ্দাম হোসেন ওরফে জিতু, বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার করিমপুর এলাকার মুন্সি বাড়ির মৃত অলি উল্যার ছেলে সালাউদ্দিন, কবিরহাট উপজেলার কবিরহাট পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের জৈনদপুর গ্রামের মোশারফ বিএসসির বাড়ির মৃত মো. শহীদুল্লার ছেলে মো. মিজানুর রহমান ওরফে রনি।

পুলিশ জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা ৭ ডিসেম্বর চৌমুহনী পৌরসভার করিমপুর এলাকার মুন্সি বাড়িতে সালাউদ্দিনের গ্যারেজে একত্রিত হয়। শাহাদাত চট্টগ্রাম থেকে ট্রাক আনে। ট্রাকে করে শাহাদাত, সালাউদ্দিনসহ ৫-৬ জন চৌমুহনীর চৌরাস্তায় যায়। রনি আরও ৪-৫ জনকে নিয়ে কবিরহাট থেকে চৌরাস্তায় আসে। সবাই চৌরাস্তা থেকে রাত ১টায় রওনা দেয়। চৌমুহনী-সেনবাগ হয়ে দাগনভূঁইয়া বাজারের আগে আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করে। রাত আড়াইটায় চাপরাশির হাটের উদ্দেশে রওনা করে। রাত সাড়ে তিনটার দিকে তারা দুধমুখা বাজার হয়ে ভূঁইয়ার হাট বাজারে পৌঁছে বামে ইউটার্ন নিয়ে কোম্পানীগঞ্জ বাজারে না ঢুকে নির্জন শাখা রোডে ঢুকে চাপরাশিরহাট বাজারে পৌঁছায়। তারা বাজারের পশ্চিম পাশে নামে। প্রথমে বাজারের নৈশপ্রহরীকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মুখে স্কচটেপসহ হাত-পা বেঁধে ট্রাকে তোলে। ট্রাক নিয়ে সামনে যায়, সেখানে আরেকজন নৈশপরহরীকে একইভাবে মুখ, হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে বাজারের পূর্বাংশে গেলে আরও দুইজন নৈশপ্রহরীকে একই কায়দায় বেঁধে ট্রাকে তোলে। সেখানে একজন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাকে ডাকাতদের মধ্য কেউ আঘাত করে। ধারণা করা হচ্ছে, আঘাতের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সে মারা যায়। 

পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘নৈশপ্রহরীদের বেঁধে ফেলার পর প্রথমে মা-মনি জুয়েলার্সে ডাকাতি শুরু করে তারা। সেখানে গ্যাস কাটার ব্যবহার করে সিন্দুক কেটে স্বর্ণালংকার ডাকাতি করে। পরে নুর জুয়েলার্সে যায় ডাকাতি করতে। সেখানে স্বর্ণের নাকের দুল ও রুপা ডাকাতি করে। ডাকাতি করার সময় তারা মা-মনি জুয়েলার্সের সিসিটিভি ভেঙ্গে হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে যায়। ডাকাতির সময় তারা পরস্পর পরস্পরকে ‘মেম্বার’ বলে সম্বোধন করে।’

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘এই দুর্ধর্ষ ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী মো. শাহাদাত। ২০১৮ সালে তার সাথে মো. মিজানুর রহমান রনির পরিচয় হয়। সে সময় দুজনই জেলে ছিল। জেল থেকে বের হয়ে তারা দুজনে মিলে নোয়াখালী ও আশপাশের জেলায় বিভিন্ন সময় ডাকাতির চেষ্টা করে। কিন্তু তারা সফল হতে পারেনি। গত ৮ ডিসেম্বর এই ডাকাতির ১৫ বা ২০ দিন আগে শাহাদাত ও রনি চাপরাশিরহাট বাজার রেকি করে। এ সময় তারা মা-মনি জুয়েলার্সকে টার্গেট করে। রেকির পর তারা বিভিন্ন সময়ে বেগমগঞ্জে অবস্থিত সালাউদ্দিনের দোকানে বসে পরিকল্পনা করে। কে কতজন লোক আনবে, কে কি অস্ত্র নিবে, কিভাবে, কখন ডাকাতি করতে যাবে এসকল পরিকল্পনা শেষে তারা সালাউদ্দিনের দোকানে বসে দিন তারিখ ঠিক করে ডাকাতি করার জন্য।’

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপস) মোহাম্মদ ইব্রাহীম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মোর্তাহীন বিল্লাহ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) মো. নাজমুল হাসান রাজিব, সহকারী পুলিশ সুপার (চাটখিল সার্কেল) নিত্যানন্দ দাস, কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা