সিদ্দিকী পরিবার
টাঙ্গাইল সংবাদদাতা
প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:৫০ এএম
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:২০ পিএম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন টাঙ্গাইলের আলোচিত সিদ্দিকী পরিবারের তিন ভাই। তারা হলেন- টাঙ্গাইল-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দুবারের মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী, টাঙ্গাইল-৮ আসনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী (বীরউত্তম) এবং টাঙ্গাইল-৪ ও ৫ আসনে মুরাদ সিদ্দিকী। ইসিতে দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণে দেখা যায়, আয় ও সম্পদে ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকী বড় দুই ভাইয়ের চেয়ে বেশ এগিয়ে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করা লতিফ সিদ্দিকী পেশা উল্লেখ করেছেন শিক্ষকতা, গবেষক ও লেখক। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হলফনামায় তিনি দায়-দেনার কিছুই উল্লেখ করেননি। কৃষি খাতে আয় না থাকার পাশাপাশি নেই কোনো কৃষিজমিও। ব্যাংকে আমানত রয়েছে মাত্র ৩ হাজার ৪৪২ টাকা। তবে কত টাকা ঋণ রয়েছেন, হলফনামায় তা উল্লেখ করেননি।
বছরে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা পান ২ লাখ ৬২ হাজার টাকা। তার অস্থায়ী সম্পত্তির মধ্যে হাতে নগদ রয়েছে ৭ লাখ ১৪ হাজার ৫৮২ টাকা। ব্যাংকে জমা ৩ লাখ ৯ হাজার ৩৫৯ টাকা। একটি টয়োটা জিপ রয়েছে, যার মূল্য ৬৫ লাখ টাকা। স্ত্রীর ২০ ভরি স্বর্ণ রয়েছে, যার অর্জনকালীন মূল্য ধরা হয়েছে ১০ হাজার টাকা। ইলেকট্রনিক ও আসবাবপত্র রয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকার।
স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে ছাতিহাটিতে ৩৯ শতাংশ পতিত জমি এবং গাজীপুর জেলার কাউলাটিয়ায় ৬৫ লাখ টাকার ১.৮৭ একর জমি। স্ত্রী লায়লা সিদ্দিকী সাবেক সংসদ সদস্য হওয়ায় তার নামে ৬ কাঠা কালিহাতীতে ৭ শতাংশ জমি ও একটি দালান রয়েছে।
এদিকে আব্দুল কাদের সিদ্দিকীর মালিকানাধীন সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থা (প্রা.) লিমিটেডের বিপরীতে অগ্রণী বাংক টাঙ্গাইল শাখায় ঋণের কারণে গত দুটি সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি। ঋণখেলাপির কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। তবে ওই ঋণ গত ২৬ নভেম্বর পুনঃতফসিলিকরণ করা হয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে। ঋণের পরিমাণ ২১ কোটি ৮০ লাখ ৩১ হাজার টাকা। পেশা কৃষি, ব্যবসা, রাজনীতি ও লেখক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
কৃষি খাতে আয় উল্লেখ করেছেন ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা। ভাড়া হতে আয় দেখিয়েছেন ৪ লাখ টকা। এ ছাড়া শেয়ার ও সঞ্চয়পত্র রয়েছে এক হাজার ৩১৮ টাকার। পেশা থেকে আয় ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তবে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির কোনো হিসাব উল্লেখ করেননি।
অপরদিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়া মুরাদ সিদ্দিকী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। হলফনামায় পেশা হিসেবে ঠিকাদার উল্লেখ করে ব্যবসা থেকে ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ৯০৩ টাকা আয়ের কথা জানিয়েছেন। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে হাতে নগদ দেখিয়েছেন ৩৪ লাখ ৭০ হাজার একশ টাকা। স্ত্রীর নামে রয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার ৭৩ টাকা। বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৩০ লাখ ৭৩ হাজার ৮১০ টাকা। স্ত্রীর নামে রয়েছে এক কোটি ২১ লাখ ৮৯ হাজার ৬৫৬ টাকা। নিজের রয়েছে একটি জিপ গাড়ি। যার মূল্য উল্লেখ করেছেন ৩৭ লাখ ৪৫ হাজার ও স্ত্রীর একটি প্রাইভেটকারের মূল্য ধরেছেন ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। নিজের ও স্ত্রীর ৬৪ ভরি স্বর্ণ রয়েছে।
ইলেকট্রনিক সামগ্রী রয়েছে ১৭ লাখ ৩৫ হাজার ১০০ টাকার। আসবাবপত্র রয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৫০০ টাকার। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ছাতিহাটিতে এজমালি ৩ একর কৃষিজমি, আকুর টাকুর পাড়ায় ৬০ শতাংশ জমির ওপর পৈতৃক বাড়ি। এ ছাড়া সেনপাড়া পূর্বতায় সাড়ে ৬ শতাংশ জমি রয়েছে। স্ত্রীর নামে টাঙ্গাইল পৌর শহরের আকুর টাকুর পাড়ায় ২১ শতাংশ জমি রয়েছে, যার অর্জনকারী মূল্য ৯৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা। বাসাইলে ৫১ শতাংশ জমি ও গুলশানে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার মূল্য এক কোটি ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। এ ছাড়া শহরের ডিস্ট্রিক্ট গেট-সংলগ্ন একটি দোকান রয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।