টাঙ্গাইল প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:১৫ এএম
টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে জাকের পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন সখীপুর উপজেলা জাকের পার্টির মৎস্যজীবী ফ্রন্টের সভাপতি আব্দুল জলিল। প্রবা ফটো
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে জাকের পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন সখীপুর উপজেলা জাকের পার্টির মৎস্যজীবী ফ্রন্টের সভাপতি আব্দুল জলিল। পেশায় ক্ষুদ্র মাছ ব্যবসায়ী জলিল শুরুতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিয়ে তেমন আগ্রহী ছিলেন না। তবে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের চাপে তিনি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থাকায় তাকেই প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছে দল। বিষয়টি একদিকে তাকে যেমন স্বীকৃতি দিয়েছে তেমনি দিয়েছে দুশ্চিন্তা। নির্বাচনের খরচ কীভাবে মেটাবেন তা নিয়ে ভাবনায় পড়েছেন আব্দুল জলিল।
তিনি বলেন, তার নির্বাচনী এলাকায় প্রচার চালাতে কমপক্ষে তার ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু এই মুহূর্তে তার হাতে টাকা নেই। ব্যাংকে আছে মাত্র দুই হাজার টাকা। তবে সব সংকট কাটিয়ে নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
সখীপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের সাতটি দলের প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাইয়ে সব প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ হয়েছে। প্রার্থীরা হচ্ছেন- বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী (কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ), অনুপম শাজাহান জয় (আওয়ামী লীগ), রেজাউল করিম (জাতীয় পার্টি), পারুল আক্তার (তৃণমূল বিএনপি), আবুল হাশেম (বিকল্পধারা বাংলাদেশ), আব্দুল জলিল (জাকের পার্টি) ও মোস্তফা কামাল (বাংলাদেশ কংগ্রেস)।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, বিধি মোতাবেক একজন সংসদ সদস্য প্রার্থী নির্বাচনে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন। আব্দুল জলিল নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দেওয়া হলফনামায় বাৎসরিক আয় উল্লেখ করেছেন ২ লাখ ৪০ হাজার। একই পরিমাণ টাকা ব্যয়ের খাতেও উল্লেখ করেছেন। ফলে তার হাতে জমা টাকা নেই। পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন মাছ ব্যবসা।
কীভাবে নির্বাচনের খরচ চালাবেন জানতে চাইলে বৈলারপুর গ্রামের মৃত বারেক মিয়ার ছেলে আব্দুল জলিল বলেন, আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ধার করব। আমার একটি পুকুর রয়েছে। সেই পুকুরের মাছ বিক্রি করলে ৫০ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। এই আড়াই লাখ টাকা দিয়েই নির্বাচন চালাতে হবে। তবে এই টাকায় নির্বাচন শেষ করা কষ্টের হবে। তাই দুশ্চিন্তায় আছি। দল থেকে কোনো আর্থিক সহযোগিতা পাইনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি পড়াশোনা করিনি। শুধু নাম সই করতে পারি। আমি লোক মুখে শুনেছি অনেক অশিক্ষিত লোকও জনগণের ভোটে এমপি হয়েছে। জনগণ ভোট দিলে এমপি হওয়া অসম্ভব কিছু না। সব আল্লাহর ইচ্ছা। আমি এমপি নির্বাচিত হলে কোনো টাকাপয়সা খাব না। শুধু মানুষের কল্যাণে কাজ করব।’
নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘অনেকে ৫০ বছর রাজনীতি করেও দলীয় মনোনয়ন পাননি। আর আমি চাওয়ার আগেই পেয়েছি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি অবশ্যই বিপুল ভোটে নির্বাচিত হব।’
সখীপুর উপজেলার বৈলারপুর গ্রামের বিএনপির সাবেক নেতা শরিফ পাপ্পু বলেন, প্রায় ৫০ বছর ধরে রাজনীতি করছি। এমপি তো দূরের কথা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন করা সাহস পাই না। আব্দুল জলিল মাছ বিক্রি করে সংসার চালান। তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি আমাদের গ্রামের গর্ব।
সখীপুর উপজেলা জাকের পার্টির সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন, ২০০৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আমি এ দলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। এরপর আর কোনো কমিটি হয়নি। সখীপুরে এখন জাকের পার্টি অনেকটা নিষ্ক্রিয়। দলের প্রার্থী আব্দুল জলিলকে আমি চিনি না। কখনও দেখেছি বলে মনে হয় না। আমি যেহেতু দলে নিষ্ক্রিয় সেহেতু এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না।