নেত্রকোণা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২:২১ পিএম
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২:২৭ পিএম
নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে নেত্রকোণা ট্র্যাজেডি দিবস। এ উপলেক্ষে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) তিন মিনিট থমকে ছিল পুরো শহর। এদিন সকাল ১০টা ৪০ মিনিট থেকে ১০টা ৪৩ মিনিট পর্যন্ত রাস্তায় কোনো যানবাহন চলেনি, হাঁটেননি কোনো পথচারী। ঘড়ির কাঁটায় ১০টা ৪০ বাজার সঙ্গে সঙ্গেই যার যার কাজ ফেলে রাস্তায় নেমে পড়েন। সড়কের বিভিন্ন যানবাহন চলাচল থামিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন চালক ও যাত্রীরা। দোকানিরাও বন্ধ রাখেন দোকান। শ্রদ্ধা জানান ১৮ বছর আগে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী নেত্রকোণা সংসদ কার্যালয়ের সামনে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ব্যক্তিদের প্রতি।
২০০৫ সালের এই দিনে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) চালানো বোমা হামলায় নিহত হন আটজন। তাদের স্মরণে প্রতি বছর ৮ ডিসেম্বর শহরের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন ‘নেত্রকোণা ট্র্যাজেডি দিবস’ পালন করে আসছে।
দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার সকাল ৯টায় শহরের অজহর রোডের উদীচী কার্যালয়ের সামনে কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়। পরে উদীচী ট্র্যাজেডি স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। এরপর একটি প্রতিবাদ মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে শেষ হয়। সেখানে ট্র্যাজেডি দিবস পালন কমিটির আহ্বায়ক আলী আসগার খানের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব অসিত ঘোষের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য দেন, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হাবিবা রহমান খান, সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামছুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভজন সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত ঘোষ, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তুহিন আক্তার, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অর্পিতা খানম, মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তাহেজা বেগম প্রমুখ। সমাবেশে বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে গণসংগীত পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
২০০৫ সালের ৯ ডিসেম্বর নেত্রকোণা মুক্ত দিবস উপলক্ষে আগের দিন ৮ ডিসেম্বর সকালে উদীচী কার্যালয়ের সামনে মহড়ার প্রস্তুতি চলছিল। এ সময় আত্মঘাতী বোমা হামলায় ঘটনা ঘটে। এতে প্রাণ হারান জেলা উদীচীর সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক খাজা হায়দার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সুদীপ্তা পাল শেলি, মোটরসাইকেল মেকানিক যাদব দাস, পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী রানী আক্তার, মাছ বিক্রেতা আফতাব উদ্দিন, শ্রমিক রইছ মিয়া, ভিক্ষুক জয়নাল এবং আত্মঘাতী আল বাকি মো. কাফি। আহত হন অর্ধশতাধিক।