খুলনা-কুষ্টিয়ায় বিএনপি নেতাদের নামে মামলা, গ্রেপ্তার ৬

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) বাস ভাঙচুরের ঘটনায় মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন ও ৫০ নেতাকর্মীর নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫০ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছে পুলিশ। নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার এসআই আশিক রেজা মামলা করার পর বৃহস্পতিবার রাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিকে, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৬৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একই আইনে মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

খুলনায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— ১৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস হাওলাদার, বিএনপি কর্মী নাসির আহমেদ ও মো. দুলাল। 

শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) বিকালে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মমতাজুল হক জানান, গত বুধবার দুপুরে নগরীর শেরেবাংলা সড়কে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বাসে বিএনপির মিছিল থেকে হামলা করে ভাঙচুর করা হয়। এতে চালকের সহকারী জুয়েলসহ দুজন আহত হন। এ মামলায় বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, খুবির বাস ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশের মামলা দায়ের ও তিনজনকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছেন খুলনার বিএনপি নেতারা। শুক্রবার মহানগর বিএনপির মিডিয়া সেলের বিবৃতিতে নেতারা বলেন, গত ৬ ডিসেম্বর নগরীর শেরে বাংলা রোডে অবরোধের সমর্থনে বিএনপি মিছিল শুরু করলে মিছিলের পেছন থেকে দুর্বৃত্তরা হামলা করে। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বিএনপির মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। দুর্বৃত্তদের হামলায় বিএনপির পাঁচজন নেতাকর্মী আহত হন। এরপর পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। 

অন্যদিকে, বাসে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে খুবি শিক্ষক সমিতি ও অফিসার্স কল্যাণ পরিষদ। খুবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর এস এম ফিরোজ ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর লস্কর এরশাদ আলী এবং অফিসার্স কল্যাণ পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী এস এম মনিরুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক দীপক চন্দ্র মণ্ডল শুক্রবার যৌথ বিবৃতিতে এ ক্ষোভ জানান। 

দৌলতপুরে বিএনপির ৬৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ৩

দৌলতপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন দৌলতপুর থানা পুলিশের এসআই প্রকাশ চন্দ্র বাছাড়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— উপজেলার তারাগুনিয়ার মাহবুবুর রহমান, একই এলাকার একতিয়ার হোসেন, শশীধরপুর প্রামাণিকপাড়ার আকিজ আলী।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনিয়া বাজারের হোন্ডার শোরুমের সামনে নাশকতা সৃষ্টির জন্য রাস্তা অবরোধ করে গাড়ি চলাচলের প্রতিবন্ধকতাসহ আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে থানা পুলিশ উপস্থিত হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখানে অবস্থানরত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যান। এ সময় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

বিএনপির নেতাকর্মীরা বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। বিএনপি নেতারা যখন মাঠে নামছে, তখনই মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। গায়েবি মামলা দিয়ে নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। 

এসআই প্রকাশ চন্দ্র বাছাড় বলেন, ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪০ জনকে আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।