বরিশাল প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৮:৪১ পিএম
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:৫৯ পিএম
বরিশাল সিটি করপোরেশন ভবন। ছবি : সংগৃহীত
সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর সময় অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া ১৩৪ কর্মচারীকে বাদ দিয়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত। বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এসব কর্মচারীর চুক্তি বাতিল করার নোটিস দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাসুমা আক্তার। এ ছাড়া সাবেক মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর সময় চাকুরিচ্যুত ৩১ কর্মচারীকে বহাল করেছেন বর্তমান মেয়র আবুল খায়ের।
গত ১২ জুন সিটি নির্বাচন ঘিরে ভাতিজা সাদিক আবদুল্লাহর সঙ্গে চাচা খায়ের আবদুল্লাহর দ্বন্দ্ব সামনে আসে। আওয়ামী লীগ আবুল খায়েরকে মনোনয়ন দেয়। ভোটে আবুল খায়ের জিতে যান। তার কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের আগে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ প্রায় ৩০০ কর্মচারী অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেন। ওই নিয়োগ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন খায়ের আবদুল্লাহ। তিনি সে সময় বলেন, ‘এই নিয়োগ অপ্রয়োজনীয়। আমাকে ঝামেলায় ফেলতেই এই নিয়োগ দেওয়া হয়।’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সিটি করপোরেশনের প্রশাসন, হাটবাজার, পরিছন্নতা, ভান্ডার, বিদ্যুৎ সম্পত্তি, জন্ম নিবন্ধন, প্রকৌশল, সিটি নিরাপত্তা, কর আদায়, সম্পত্তি, বাণিজ্য ও জনসংযোগসহ কয়েকটি শাখায় কর্মরত ১৩৪ জন কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করার নোটিস টানিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ৫১ জন কর্মচারীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কর্মস্থলে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। আগামী রবিবার তাদের চূড়ান্তভাবে চাকুরিচ্যুত করা হবে। আরেক নোটিসে দেখা গেছে, সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ দায়িত্বে থাকার সময় চাকুরিচ্যুত ৩১ জনকে পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
নোটিস দেওয়ার পর চাকুরিচ্যুতদের যোগাযোগের অনুরোধ জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও বর্তমানে মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রইজ আহমেদ মান্না। এ বিষয়ে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে মান্না বলেন, নোটিস দেওয়ার পর অনেক চাকুরিচ্যুত কর্মচারী তার সাথে যোগযোগ করেছেন। মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি সকলের পাশে থাকবেন।
মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার একান্ত সহকারী সচিব (এপিএস) মো. রুবেল হাওলাদার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘নতুন মেয়রকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে অপ্রয়োজনীয় ও অবৈধ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সবাইকে দুই মাসের আগাম বেতন দিয়ে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন শাখায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’
রুবেল হাওলাদার আরো জানান, সাবেক মেয়র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১৯ কোটি টাকা বেতন বকেয়া রেখে গেছেন; ৩৯ জন স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অবৈধভাবে চাকুরিচ্যুত করেছেন। ওএসডি করা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের খোরপোষের ভাতাও দেননি। সবাই মানবেতর জীবন-যাপন করেছেন। এখন তাদের পুর্নবাসনের প্রক্রিয়া চলছে।
সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাসুমা আক্তার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, তাদের যে লোকবল প্রয়োজন তার দ্বিগুণ হয়ে গেছে। যাদের বাদ দেওয়া হয়েছে তারা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিয়োজিত কর্মচারী। নিয়োগ দেওয়ার সময় শর্ত ছিল কর্তৃপক্ষ চাইলে নিয়োগ বাতিল করতে পারবে। তাই ১৩৪ জনের নিয়োগ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাতিল করা হয়েছে। আরও ৫১ জনের নিয়োগ রবিবার বাতিল করা হবে।