মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২২ ২১:০৯ পিএম
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২২ ২৩:০৭ পিএম
হীরালাল সেনের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা। ছবি : প্রবা
ভারত উপমহাদেশে চলচ্চিত্রের জনক হীরালাল সেনের ১০৫তম প্রয়াণ দিবস পালিত হয়েছে মানিকগঞ্জে।
বুধবার ( ২৬ অক্টোবর) বিকালে মানিকগঞ্জ পৌরসভার বকজুড়ী গ্রামে তার জন্মভিটায় এই অনুষ্ঠান হয়। তা ছাড়া বকজুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আলোচনা সভা, শ্রদ্ধাঞ্জলি ও গ্রামীণ খেলার আয়োজন করে হীরালাল সেন প্রয়াণ দিবস উদযাপন পরিষদ। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. সানোয়ারুল হক, পৗরমেয়র মো. রমজান আলী, সমাজসেবক ইকবাল হোসেন কচিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন। বক্তারা হীরালাল সেনের বেহাত সম্পত্তি উদ্ধার করে তার নামে গবেষণাগার নির্মাণের দাবি জানান।
১৮৬৬ সালে বকজুড়ী গ্রামে জন্ম হীরালাল সেনের। পিতা চন্দ্রমোহন সেন, মাতা বিধূমুখী সেন। পিতামহ গোকুল কৃষ্ণ মুনশি ছিলেন ঢাকা জজ আদালতের নামকরা আইনজীবী। পরে কলকাতা হাইকোর্টে যোগ দেন তিনি। আট ভাই-বোনের মধ্যে হীরালাল ছিলেন দ্বিতীয়। মানিকগঞ্জ মাইনর স্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু, সেই সঙ্গে মৌলভী সাহেবের কাছে ফরাসিও শিখতেন তিনি। ১৮৭৯ সালে মাইনর পাস করে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন হীরালাল। কলকাতায় আইএসসি অধ্যয়নকালে চলচ্চিত্রের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়লে তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ হয়ে যায়। হীরালাল বিয়ে করেন হেমাঙ্গিনী দেবীকে। তিন সন্তান হয় তাদের।
‘A Dancing Scene From the Opera’ ছিল তার ধারণ করা প্রথম ছবি। অধ্যাপক স্টিভেনসনের কাছ থেকে ধার করা ক্যামেরা দিয়ে তিনি এই ছবি তৈরি করেন। পরে তিনি ভাই মতিলাল সেনের সঙ্গে দি রয়াল বায়োস্কোপ কোম্পানি গড়ে তোলেন। হীরালাল সেন ৪০টির বেশি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। ১৯০৩ সালে তিনি পূর্ণদৈর্ঘ্য আলিবাবা ও চল্লিশ চোর নির্মাণ করেন। এ ছাড়া তিনি তথ্যচিত্র, সংবাদচিত্র, প্রামাণ্যচিত্র ও বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাণ করেন। কলকাতার ক্লাসিক থিয়েটারে নিজের তোলা স্থিরচিত্র প্রদর্শন করে ভারতীয় শিল্প ও কৃষি প্রদর্শনীতে স্বর্ণপদক লাভ করে তিনি। ঢাকার ক্রাউন থিয়েটার, জয়দেবপুর রাজবাড়ি, ঢাকার নবাববাড়ি ও জন্মভূমি বকজুড়ী গ্রামে তিনি তার তৈরি ছবির প্রদর্শন করেন। দুরারোগ্য ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ১৯১৭ সালে ভারতে মৃত্যুবরণ করেন এই গুণী স্রষ্টা। মৃত্যুর কিছুদিন আগে এক অগ্নিকাণ্ডে তার সমস্ত শিল্পকর্ম নষ্ট হয়ে যায়।
প্রবা/টিকে/এমজে