কক্সবাজারে ট্রেন চালুর পর ইজিবাইক
কক্সবাজার অফিস
প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:৪৯ পিএম
আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:১৫ পিএম
ট্রেন চালুর পর কক্সবাজার শহরে ইজিবাইকের নতুন ভাড়া নিয়ে চলছে সমালোচনা। প্রবা ফটো
কক্সবাজার শহরের প্রবেশমুখ লিংক রোড থেকে প্রধান সড়ক হয়ে শহরের লালদীঘির পাড়া অথবা বাইপাস হয়ে কলাতলীর মোড়। এই পুরো পথে ইজিবাইকের (টমটম) ভাড়া নির্ধারণ করা আছে ২০ টাকা। সৈকতের শহরে ট্রেনের যাত্রা শুরুর দিন থেকে দেখা দিয়েছে ভাড়া নৈরাজ্য। এক লাফে ৩০ টাকা ভাড়া বাড়িয়ে রাখা হচ্ছে ৫০ টাকা। টমটম চালকদের দাবি, ট্রাফিক পুলিশ ‘কক্স-ক্যাব’ অ্যাপে এই ভাড়া ঠিক করে দিয়েছে। তবে ট্রাফিক পুলিশ নিজেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, অ্যাপের মাধ্যমে চালকরাই নতুন ভাড়া নির্ধারণ করেছে।
শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) বহুলকাঙ্ক্ষিত ৪৮০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ঢাকা-কক্সবাজার রেলপথে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় ট্রেনের যাত্রা। দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে সৈকতের শহর কক্সবাজারের আইকনিক রেলস্টেশন থেকে ১ হাজার ২০ যাত্রী নিয়ে প্রথমবার ঢাকা পৌঁছায় ২০ বগির ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’। রাতে জেলার পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন চৌধুরী ঘোষণা দেন, ট্রেনে কক্সবাজারে আসা পর্যটকদের রেলস্টেশন থেকে কক্সবাজার শহরে আসাকে নির্বিঘ্ন ও হয়রানিমুক্ত করতে ‘কক্স-ক্যাব’ অ্যাপে ইজিবাইক সেবা চালু করা হয়েছে।
নিরাপদ ও পর্যটনবান্ধব ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা গড়ার লক্ষ্যে এমন উদ্যোগ এবং নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দময় ভ্রমণের জন্য কক্স-ক্যাব নিবন্ধিত চালকদের গাড়ি (টমটম) ব্যবহার করার আহ্বান জানান পুলিশ কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন চৌধুরী।
অ্যাপে নির্ধারণ ভাড়ার হিসাবে শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল থেকে কক্সবাজারের ঝিলংজায় অবস্থিত আইকনিক রেলস্টেশন থেকে লিংক রোড পর্যন্ত ২০০ মিটার কম দূরত্বে জনপ্রতি ৫০ টাকা গুনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ ছাড়া রিজার্ভ নিলে ভাড়া ২০০ টাকা; যা আগে ছিল ১৫০ টাকা। জানাজানি হওয়ার পর ভাড়া নৈরাজ্য দাবি করে সমালোচনা করছেন জেলার মানুষ।
খোরশেদ আলম নামের এক যুবক ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন, ‘কলাতলীর মোড় হয়ে রেলস্টেশন পর্যন্ত শুক্রবার সকালেও ১০ টাকা জনপ্রতি ভাড়া দিয়ে অনেকে গেছেন। এটা ৫০ টাকা করার কারণ কী?’
শহরের একটি আবাসিক হোটেল কর্মকর্তা করিম উল্লাহ উল্লেখ করেছেন, ‘লিংক রোড পর্যন্ত দীর্ঘ দিন ধরে ভাড়া ২০ টাকা। এটা ৫০ টাকা করেছে ট্রাফিক পুলিশ। অথচ ভাড়া তো পৌরসভা থেকে নির্ধারণ করা ছিল।’
জানতে চাইলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অ্যাপটি চালু করা হয়েছে। নিবন্ধন করা হয়েছে চালকদের। অ্যাপের মাধ্যমে চালকরাই এ ভাড়া নির্ধারণ করেছে। যেহেতু সমালোচনা হচ্ছে তাই পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ‘কক্স-ক্যাব’ অ্যাপে একাধিক ইজিবাইকচালক জানান, অ্যাপটি জেলা ট্রাফিক পুলিশের তৈরি করা। ট্রাফিক পুলিশের কথায় অনেক চালক এটাতে নিবন্ধন করেছে। ভাড়াও দূরত্ব অনুসারে অ্যাপে নির্ধারণ করে দেওয়া। এখানে চালকদের কোনো হাত নেই।
নতুন নির্ধারণ করা ভাড়ার সঙ্গে পৌরসভার সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানান মেয়র মো. মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী। তিনি জানান, ইজিবাইকসহ অন্য পরিবহনের ভাড়া আগে থেকে পৌরসভা নির্ধারণ করে রেখেছে। সে হিসাবে লিংক রোড় থেকে কলাতলী বা লিংক রোড় থেকে কক্সবাজার শহর পর্যন্ত ভাড়া জনপ্রতি ২০ টাকা।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাপস রক্ষিত বলেন, ‘২০ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা নির্ধারণের কোনো কারণ থাকতে পারে না। এটা দ্রুত বাতিল করে আগের ভাড়া নির্ধারণ করতে হবে।’