শরীয়তপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:৪৯ পিএম
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২:৩৮ পিএম
আহত যুবলীগ নেতা আল-আমিন হামজা স্বতন্ত্র প্রার্থী খালেদ শওকতের সমর্থক। প্রবা ফটো
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী একেএম এনামুল হক শামীম ও স্বতন্ত্র ডা. খালেদ শওকত আলীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এ সময় শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নড়িয়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে অজ্ঞাতনামা দু-তিনশ জনকে আসামি করে মামলা করেছে।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ ঘটনায় এক পক্ষ অন্য পক্ষকে দায়ী করছে। তবে সংঘর্ষে জড়ানো দুই পক্ষের কেউ মামলা করেনি।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য একেএম এনামুল হক শামীম। আর এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. খালেদ শওকত আলী। গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে নড়িয়া বাজারে এনামুল হক শামীম ও খালেদ শওকতের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। দুই পক্ষই ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরে দুই পক্ষের সমর্থকরা শতাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় নড়িয়া বাজারের সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাব গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এতে পথচারীসহ দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল বিস্ফোরণে আহতরা হলেন নড়িয়ার কেদারপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম তপন ছৈয়াল, নড়িয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন হামজা, যুবলীগ নেতা সোহেল কাজী, কনক লস্কর, সোহেল বন্দুকছি, পথচারী রনি মিয়া, জাকির হোসেন, রবিন ছৈয়ালসহ অন্তত ১০ জন।
তাদের নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মাজেদা শওকত হাসপাতাল ও শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী খালেদ শওকত আলী বলেন, ‘আমি সুরেশ্বর হুজুরের বাড়িতে মিলাদে যাই। তখন শুনতে পাই নড়িয়া বাজারে আমার সমর্থক কনক ও আল আমিনের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। তাদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তখন আমি থানায় অভিযোগ করতে আসি। থানার সামনে এলে দুষ্কৃতকারীরা আমার গাড়ির ওপর ককটেল ছুড়ে মারে। আমার পেছনের গাড়ি থামিয়ে আমার ড্রাইভারের চাবি নিয়ে যায় এবং তপন, সোহেল কাজীকে মারধর করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি মোস্তফা সিকদার ও সুমন সিকদারের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। তারা দুজন এনামুল হক শামীমের কর্মী বলেই আমি জানি। আমি বিশ্বাস করি, নড়িয়া-সখিপুরের মানুষ ব্যালটের মাধ্যমে এর প্রতিশোধ নেবে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মোস্তফা সিকদারকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।
নৌকা প্রার্থীর সমর্থক নড়িয়া পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর কিছু লোকজন বাজারে এসে উত্তেজনা সৃষ্টি করে, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে আমাদের লোকজনের সঙ্গে তাদের মারামারি বাধে। এ সময় সোহেল বন্দুকছি নামে আমাদের একজন আহত হয়। তাই আমরা মামলা করব।’
জানতে চাইলে একেএম এনামুল হক শামীম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘স্থানীয় ক্যাবল ব্যবসা নিয়ে এ সংঘাত হয়। আমি শুনছি খালেদ শওকতের বাড়ি থেকে বোমা এনে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। সেখান থেকে বালতিতে করে বোমা এনে মেরেছে। আমার এবং নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।’
তিনি দাবি করেন, ‘এটি কোনো নির্বাচনী সংঘর্ষ নয়। এটা ক্যাবল ব্যবসায়ীদের বিষয়। এখনও নির্বাচনী প্রচার শুরু হয়নি। স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন বোমা ফাটিয়ে আমাদের নৌকার ওপর দোষ দিচ্ছে।’