নাগরিক সংলাপ
সাতক্ষীরা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২৩ ২১:২৪ পিএম
জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি ও সংকট নিরূপণে উপকূলীয় জেলাগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। একই সঙ্গে জলবায়ু তহবিলের অর্থ ব্যয়েও জলবায়ু উদ্বাস্তুদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। এজন্য আসন্ন কপ-২৮ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী দেশগুলোর কাছ থেকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ আদায়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাতে হবে। উপকূলের জন্য উপযোগী উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) সাতক্ষীরা শহরের ম্যানগ্রোভ সভাঘরে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ (বারসিক) আয়োজিত ‘উপকূলীয় অঞ্চলের জলবায়ু সংকট ও ন্যায়বিচার’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে বক্তারা এসব দাবি জানান।
সংলাপে জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক আজাদ হোসেন বেলালের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন শিক্ষাবিদ আব্দুল হামিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএএম আব্দুল ওয়াহেদ, জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, পরিবেশকর্মী আশেক-ই-এলাহী, সুজন-জেলা সভাপতি পবিত্র মোহন দাশ, সংগীতশিল্পী আফফান রোজবাবু, সাংস্কৃতিককর্মী মোসফিকুর রহমান মিল্টন, উন্নয়নকর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত, মহিলা পরিষদ নেত্রী জোৎস্না দত্ত, গণফোরাম নেতা আলী নূর খান বাবুল; শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিমের সদস্য মুশফিকুর রহমান প্রমুখ।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি ও নানা সংকটের কথা তুলে ধরে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রবণতা বেড়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে বারবার নদীভাঙনের ফলে মানুষ বাস্তুভিটা ও সহায়-সম্পদ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্তার বিস্তার ঘটছে। মিষ্টি পানির উৎস নষ্ট হয়ে যাওয়ায় খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। লবণ পানি ব্যবহারের কারণে উপকূলীয় নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। মাটির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে কৃষি উৎপাদন। প্রাণবৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, উপকূলীয় এলাকায় খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় পুষ্টিহীনতা বাড়ছে। বাল্যবিবাহ ও ঝরে পড়ার হার কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়েছে শিশুশ্রম। নারীদের গর্ভধারণের ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। বাড়ছে বিবাহবিচ্ছেদ। মানুষ কর্মসংস্থানের অভাবে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয় থাকলেও তার কোনো সুফল উপকূলের মানুষ পাচ্ছে না। তারা নিজস্ব শক্তি-সামর্থ্য ও জ্ঞান দিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। দুর্যোগঝুঁকি মোকাবিলায় তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তা না হলে সাতক্ষীরা অঞ্চলের জলবায়ু উদ্বাস্তুর সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।