সারা দেশে পানিতে ডুবে প্রাণ গেল ৫ জনের

দেশের তিন জেলায় পানিতে ডুবে চার শিশুসহ এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার রাত থেকে শনিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। আমাদের প্রতিবেদক ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর- 

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় বাড়ির পাশের পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলার বখ্তপুর ইউনিয়নের হীরাগাজী বাড়ির পাশের পুকুর থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।

মারা যাওয়া দুই শিশু হলো- ইউনিয়নের হীরাগাজী বাড়ির মৃত নুরুল আজমের মেয়ে তাবাসসুম আলম তুমুর ও জাহানপুর আব্দুর রশিদ সালামের বাড়ির মো. নাছিরের মেয়ে ওয়াজিহা। ওয়াজিহা পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তুমুরদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মোবারক আলী এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘৪০ দিন আগে তাবাসসুমের বাবা আজম ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আজ তাদের বাড়িতে আজমের চল্লিশা চলছিল। এর মধ্যে দুপুরে তাবাসসুম ও তার আত্মীয় ওয়াজিহাকে দেখতে না পেয়ে খুঁজতে শুরু করে। একপর্যায়ে বাড়ির পাশে পুকুরে তাদের দুজনকে ভাসতে দেখে স্বজনরা। পরে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’

এদিকে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে পৃথক দুর্ঘটনায় পানিতে ডুবে দুই বছরের সাদিয়া আক্তার জাইফা ও চার বছরের মো. ওমর নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুরে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

সাদিয়া আক্তার জাইফা রিচ্ছর গ্রামের দিনমজুর দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে। তিনি জানান, সাদিয়া ঘরের বাইরে খেলছিল। তার মা ঘরের একটি কাজে ব্যস্ত ছিল। তার অগোচরেই সাদিয়া পুকুরের পানিতে পড়ে ডুবে যায়। কিছুক্ষণ পর তাকে ঘরের বাইরে দেখতে না পেয়ে তার মা খোঁজাখুঁজি করে। একপর্যায়ে পুকুরের পানিতে তাকে ভাসতে দেখে। তাৎক্ষণিক সাদিয়াকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মো. ওমর উপজেলার করপাড়া ইউনিয়নের করপাড়া গ্রামের হামিদুর রহমানের ছেলে। তিনি বলেন, আমি ঘটনার সময় বাজারে ছিলাম। ওমর একা ঘরে খেলছিল। তার মা-ও ঘরের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এ সময় মায়ের অগোচরে ওমর ঘর থেকে বের হয়ে পুকুরে পড়ে পানিতে ডুবে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে পোদ্দার বাজারের ভাই ভাই হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ঘটনাগুলো কেউ আমাদের জানায়নি। খোঁজ নেওয়া হবে।

এ ছাড়া পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনালের জেটি থেকে নদীতে পড়ে সাইফুল হাওলাদার নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে লালুয়া ইউনিয়নের চাড়িপাড়া গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সাইফুল ওই ইউনিয়নের মাঝের হাওলা গ্রামের ইউনুছ হাওলাদারের ছেলে। সে পায়রা বন্দরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়নার সিসিইসিসির সাব প্রতিষ্ঠান হুনানে কর্মরত ছিল। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকালে প্রথম টার্মিনালের জেটিতে অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে কাজ করছিল সাইফুল। সন্ধ্যার দিকে পা ফসকে রাবনাবাঁধ নদীতে পড়ে জেটির সঙ্গে মাথায় আঘাত পেয়ে ডুবে যায়। পরে সন্ধ্যায় অন্যান্য শ্রমিক ও পায়রা বন্দরের ডুবুরি দল তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। কলাপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।