× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জীবনযুদ্ধে হার না মানা প্রতিবন্ধী মনিরুল

রফিকুল আলম,অভয়নগর (যশোর)

প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২৩ ১২:৪৩ পিএম

হুইল চেয়ারে করে ঘুরে বেড়ান প্রতিবন্ধী মনিরুল। প্রবা ফটো

হুইল চেয়ারে করে ঘুরে বেড়ান প্রতিবন্ধী মনিরুল। প্রবা ফটো

দরিদ্র পরিবারে প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নিয়েছি। কোনোদিন ভিক্ষা করিনি, কোনো না কোনো কিছু করার চেষ্টা করেছি। কোনো সময় খেয়েছি কোনো সময় পেটে ক্ষুধা রেখে স্ত্রী, মা, প্রতিবন্ধী বোন ও সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়েছি। এরপরও কারও কাছে হাত পাতিনি। ছোটবেলা থেকে মুরগির ডিম বিক্রি করে টাকা জমিয়ে একটি ফলের দোকান দিয়েছিলাম। সেটাও এখন অর্থাভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।

জীবনযুদ্ধে হার না-মানা আকাশ সমান স্বপ্ন নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী ৫২ বছরের মনিরুল ইসলাম। তার বাড়ি যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রাজঘাট গ্রামে। তার দুটি ছেলেসন্তান রয়েছে।

অভয়নগর উপজেলা রাজঘাট গাজীপুর সড়কের পাশে (রাজঘাট বাসস্ট্যান্ড) ছোট একটি কাঠের টেবিল নিয়ে কিছু ফল বিক্রি করতেন মনিরুল। ২০০৮ সালের দিকে মুরগির ডিম বিক্রি করে জমানো দেড় হাজার টাকা নিয়ে ফলের ব্যবসা শুরু করেন। পরে ছয় মাস অন্তর অন্তর সরকারের প্রতিবন্ধী ভাতা চার হাজার পাঁচশ টাকা জোগাড় করে সাড়ে ছয় হাজার টাকা দিয়ে এই ব্যবসা একটু বড় করেন। এই অল্প পুঁজির ব্যবসা থেকে চলত তার সংসার। নুন আনতে পান্তা ফুরায় সংসারে, তবুও কোনো রকম চলত সংসার। তবে পরে অর্থাভাবে ওই ফলের ব্যবসাটাও বন্ধ হয়ে গেছে। এখন মানবেতর জীবন কাটছে তাদের।

প্রতিবন্ধী মনিরুল ইসলাম সম্প্রতি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমি জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। আমার আর এক বোন নাছিমা খাতুন। তিনিও জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। সবসময় তিনি অসুস্থ থাকেন। আমি নিজেও অসুস্থ। আমাদের দুজনের  পেছনে প্রতিমাসে চিকিৎসা বাবদ ব্যয় হয় দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। আমার বড় দুই ভাইয়ের আলাদা সংসার। আমি আমার স্ত্রী, দুই সন্তান, মা ও প্রতিবন্ধী বোনকে নিয়ে কোনো রকমে খেয়ে না-খেয়ে দিন কাটাই। কোনো কাজ করতে পারি না। গত ৬ মাস আগে আকিজ গ্রুপ থেকে আমাকে একটি হুইল চেয়ার দেওয়া হয়েছে। তাই দিয়ে কোনো রকমে চলাফেরা করি। আর নওয়াপাড়ার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান নোয়াপাড়া গ্রুপ থেকে এক বছর যাবৎ প্রতিমাসে দুই হাজার টাকা করে দেয়। কিন্তু সেই টাকা আমার ও প্রতিবন্ধী বোনের চিকিৎসা বাবদ খরচ হয়ে যায়। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। আমি আমার দুই ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়ে শিক্ষিত করতে চাই।’ 

রাজঘাট বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডেকারেটর ব্যবসায়ী মো. নুরুজ্জামান (নিরু) বলেন, ‘মনিরুলের দরিদ্রতার কথা আমরা সবাই জানি। সমাজে বিত্তবানদের কাছে আহ্বানÑ কেউ মনিরুলকে একটি দোকানের ব্যবস্থা করে দিলে তার দরিদ্র পরিবার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের হাত থেকে রেহাই পেত।’

নওয়াপাড়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. বিপুল শেখ বলেন, ‘প্রতিবন্ধী মনিরুল ইসলাম ও তার প্রতিবন্ধী অসুস্থ বোন নাছিমা খাতুনকে সর্বরকম সহযোগিতার চেষ্টা করে থাকি। ভবিষ্যতে আরও কোনো সুযোগ থাকলে আমি সেটা দেখব। আমি তার সন্তানদের লেখাপড়ার ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে থাকি।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা