প্রবা প্রতিবেদক, বরিশাল
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:৪৭ পিএম
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ২০:০৮ পিএম
বৃহস্পতিবার দুপুরে চরমোনাই মাহফিলের দ্বিতীয় দিনে জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্য দেন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। প্রবা ফটো
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে হলে ইসলামী আন্দোলন অংশ নেবে না বলে জানিয়েছেন দলটির আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই মাহফিলের দ্বিতীয় দিনে জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ’২০১৪ ও ২০১৮ সালে আমরা দেখেছি দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হয়নি। দলীয় সরকারের অধীনে এই নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে না। তাই দলীয় সরকারের অধীনে আমাদের নির্বাচনে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ’দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আপনারাও ভোটকেন্দ্রে যাবেন না।’
রেজাউল করীম বলেন, ’’আওয়ামী লীগের শাসনামলে বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ‘এক্সসেপ্ট ইসরায়েল’ উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকার ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারাই অন্যদের ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলা নিয়ে সমালোচনা করছে। যা খুবই হাস্যকর।’’
তিনি বলেন, ’আমরা ফিলিস্তিনের পক্ষে সব সময়ই সোচ্চার ছিলাম।’
সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। তিনি বলেন, ’দেশে এখন নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে। অর্থনৈতিক সংকট আজ বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে। এই সংকট, অনিশ্চয়তা, অস্থিরতা ও অশান্তির জন্য দায়ী বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। দলটির সীমাহীন ক্ষমতালিপ্সার কারণে দেশে আজ চরম সংকট। এরা দেশকে ভালোবাসে না। তাই দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে জগদ্দল পাথরের মতো টিকে থাকতে চায়। এই অবৈধ সরকার বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং প্রত্যেকটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে।’
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের দিল্লি সফরের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ’দিল্লি কি বাংলাদেশের রাজধানী? সেখানে গিয়ে কেন অন্যান্য দেশের কূটনৈতিকদের সঙ্গে বৈঠক করতে হবে?’
তিনি বলেন, ’দিল্লি ওবায়দুল কাদের সাহেবদের রাজধানী হতে পারে। এদের কথাবার্তা ও আচরণে মনে হচ্ছে বাংলাদেশ কোনো স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র নয়।’
বাংলাদেশের জনগণ আর এক মুহূর্তও এই অবৈধ সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না, দাবি করে তিনি বলেন, ’আমিরের ঘোষিত দাবির আলোকে দ্রুততম সময়ে অবৈধ সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’
ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, ’আমাদের এখন প্রথম কাজ হলো এই অবৈধ সরকারের পতন ঘটানোর আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করা এবং একই সঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ যেহেতু নির্বাচনমুখী দল, সেহেতু আমাদের নির্বাচনের প্রস্তুতিও রাখতে হবে। যদি নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তবে আমিরের নির্দেশ অনুযায়ী নির্বাচনে ঝাপিয়ে পরে হাতপাখাকে বিজয়ী করতে হবে।’
ওলামা সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব আলহাজ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ ইমতিয়াজ আলম, জামিয়া ইসলামিয়া মদিনাতুল উলুম তিলপাপাড়া-ঢাকার মুহাতামীম মাওলানা ইউনুছ ঢালী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম আতিকুর রহমান প্রমুখ।