× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

নার্গিসের কষ্ট কি তবে ঘুচছে

গাজীপুর প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:১৯ পিএম

আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:৪৪ পিএম

জালাল উদ্দিনের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে একটি কারখানা কর্তৃপক্ষ। প্রবা ফটো

জালাল উদ্দিনের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে একটি কারখানা কর্তৃপক্ষ। প্রবা ফটো

গাজীপুরে শ্রমিক ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মারা যাওয়া জালাল উদ্দিনের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে একটি কারখানা কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিকভাবে দেড় লাখ টাকার চেক দিয়ে জালালের পরিবারে সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন তারা। এ ছাড়া তারা জালালের স্ত্রীর চাকরির ব্যবস্থা ও সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়েছেন।

পোশাকশ্রমিকদের অসন্তোষকে কেন্দ্র করে থেমে যায় জালাল উদ্দিনের অদম্য পথচলা। ১২ নভেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তিনি। অগোছালো সংসারে রেখে যান স্ত্রী আর এক শিশুসন্তান। শোকের ছায়ার সঙ্গে জালালের পরিবারের নেমে আসে দমবন্ধ অবস্থা। 

জালালের মৃত্যুর ১০ দিনের মাথায় তার পরিবারের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয় মাল্টিফ্যাবস লিমিটেড নামের একটি কারখানা কর্তৃপক্ষ। তাদের আমন্ত্রণে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর নয়াপাড়ায় ওই কারখানায় আসেন জালালের স্ত্রী নার্গিস পারভীন ও একমাত্র নয় বছর বয়সি মেয়ে জান্নাতুল বাকিয়া মরিয়ম। পরে তাদের হাতে দেড় লাখ টাকার চেক তুলে দেন কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ডা. মেজবা ফারুকী।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কারখানার এজিএম (এইচআর ও এডমিন) আবু সেহাব, ব্যবস্থাপক রিপুল মিয়া, সহকারী ব্যবস্থাপক খ. আহমাদুল কবির মান্না, এক্সিকিউটিভ ওমর হামদু, শ্রমিক প্রতিনিধি সায়লা আক্তার, আরিফা আক্তার, নাজমুল হুদা, মনির হোসেন, সোহাগ হোসেন প্রমুখ।

আরও : কে শুনবে এই আর্তনাদ

মাল্টিফ্যাবস কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজবা ফারুকী বলেন, ‘সম্পূর্ণ মানবিক দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পত্রিকায় যখন জালালের মেয়ের ছবি দেখেছি, ভেতরটা কেঁপে উঠেছে। আমি সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। পরে সিদ্ধান্ত নিয়েছি মেয়েটির পড়াশোনার সমস্ত খরচ বহন করব। তার বিয়ে দেওয়া পর্যন্ত সব দায়িত্ব নিয়ে নিলাম। আমি জালালের স্ত্রীরও একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দিব।’

জালাল উদ্দিন গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে অবস্থিত ইসলাম গ্রুপের সুইং সুপারভাইজার ছিলেন। ৮ নভেম্বর বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গাজীপুরের কোনাবাড়ীর জরুন এলাকায় বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে আহত হন তিনি। সেদিন গুরুতর আহত অবস্থায় জালাল উদ্দিনকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। ১২ নভেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

জালাল উদ্দিনের বাড়ি নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা ইউনিয়নের বাঁশাটি এলাকায়। বসতভিটাটুকু ছাড়া কোনো সম্পদ নেই পরিবারের। একসময় গ্রামে চায়ের দোকানের ব্যবসা করতেন জালাল। নয় বছর আগে গাজীপুরে আসেন তিনি। শুরু হয় নতুন জীবনযুদ্ধ। কঠোর পরিশ্রম করে গার্মেন্টসের সুপার ভাইজার পদে আসেন তিনি। গাজীপুরে এসেই নার্গিসের সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। তারপর বিয়ে। সংসারে আসে মেয়ে জান্নাতুল বাকিয়া মরিয়ম। কোনাবাড়ীর জরুন এলাকার গাজীপুর সিটি আইডিয়াল স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে সে।

জান্নাতুল বাকিয়া মরিয়ম বলে, ‘বাবা চাইতো আমি ডাক্তার হব। সব সময় বলত বাবা, আমি যেন পড়াশোনা করে ডাক্তার হই। আমি ডাক্তার হতে চাই।’

নার্গিস পারভীন বলেন, ‘স্বামী মারা গেছে। আমি এখন অসহায়। বিএ পাস করে এতদিন গৃহিণী ছিলাম। মাল্টিফ্যাবস্ কারখানা আমাকে চাকরি দিতে চেয়েছে। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। সন্তানের দায়িত্ব নিয়েছে, এই ঋণ আমি শোধ করতে পারব না।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা