বাগেরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৩ ১৩:০২ পিএম
মাহে আলম। প্রবা ফটো
অবশেষে নিখোঁজের সাত মাস পরে বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার চিলা এলাকার হিলটন নাথের বাড়ি থেকে মাহে আলমের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে সোমবার (২০ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হাবিবুর রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান তুষার ও মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুদ্দিনসহ দুই পরিবারের লোকদের উপস্থিতিতে এই মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
মরদেহ উত্তোলন করে মাহে আলমের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মরদেহের গোসল ও ধর্মীয় বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান শেষে এদিন মাগরিবের নামাজের পরে মোংলার বিএলএস মসজিদ প্রাঙ্গণে মাহে আলমের জানাজা সম্পন্ন হয়। পরে মোংলা পৌর কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাহে আলমের ছেলে সোহেল রানা।
এদিকে হিলটন নাথের নামে দেওয়া সমাধি থেকে মাহে আলমের মরদেহ উত্তোলনের সময় তার মা বিথিকা নাথ ছেলের মরদেহ পাওয়ার জন্য কান্নায় ভেঙে পড়েন। সুন্দরবনে নিখোঁজ হিলটন নাথ কোথায় আছে, সে কি বেঁচে আছে না মারা গেছে, মারা গেলে তার মরদেহ কী হয়েছেÑ এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে মোংলাজুড়ে।
থানা-পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ এপ্রিল সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হন চিলা এলাকার হিলটন নাথ। অন্যদিকে ১০ এপ্রিল মোংলার ব্যবসায়ী মাহে আলম বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। ১৩ এপ্রিল সুন্দরবনের করমজলে একটি অজ্ঞাতনামা মরদেহ পাওয়া যায়। হিলটন নাথের মা বিথিকা নাথের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ এপ্রিল দাকোপ থানা-পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহটি তার কাছে হস্তান্তর করে। হিলটন নাথ হত্যার বিষয়ে খুলনার দাকোপে এবং মাহে আলম নিখোঁজের বিষয়ে বাগেরহাটের মোংলা থানায় দুটি মামলা হয়।
এদিকে মাহে আলমের ছেলের আবেদনের ভিত্তিতে আদালত হিলটন হিলটন নাথ নামে সমাহিত মরদেহ, হিলটন নাথের মা ও মাহে আলমের ছেলের ডিএনএ টেস্টের আদেশ দেন। ১ আগস্ট ডিএনএ টেস্টের রিপোর্টে জানা যায়, হিলটন নাথ হিসেবে সমাহিত মরদেহ মাহে আলমের। পরে ৮ নভেম্বর আদালত হিলটন নাথ হিসেবে সমাহিত মরদেহ উদ্ধার করে মাহে আলমের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন বাগেরহাটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট খোকন।
মাহে আলমের ছেলে সোহেল রানা বলেন, ‘পুলিশ আমার বাবার মরদেহ আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। মাগরিবের নামাজ শেষে বাবার নামাজে জানাজা হয়েছে। পরে পৌর কবরস্থানে বাবাকে দাফন করা হয়েছে। বাবার মরদেহ পেয়েছি, এটাই আমাদের সান্ত্বনা। এখন বাবার খুনিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশের সহায়তা চাচ্ছি।’
মোংলা থানার ওসি মো. সামসুদ্দিন বলেন, আদালতের নির্দেশে উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) উপস্থিতিতে এই মরদেহ উত্তোলন করে মাহে আলমের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছেন।