রাঙামাটি প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:৪৯ পিএম
আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২৩ ২০:৫৮ পিএম
পার্বত্য জেলা রাঙামাটির সরকারি শূকর উন্নয়ন খামারে গত এক সপ্তাহে মারা গেছে ৭০ শূকর। আরও অর্ধশতাধিক শূকর অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কিন্তু কী কারণে শূকরগুলো মারা গেছে বা আক্রান্ত হচ্ছে, তা এখনও জানতে পারেনি খামার কর্তৃপক্ষ। আর খামারে থাকা বাকি শূকরগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন চিকিৎসকরা।
১৯৮৪ সালে রাঙামাটি সদরের মানিকছড়িতে প্রতিষ্ঠিত হয় দেশের একমাত্র সরকারি এই শূকর খামার। খামারটির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণসহ তাদের আর্থিকভাবে সাবলম্বী করতে সরকারি ভর্তুকি দিয়ে শূকরের বাচ্চা উৎপাদন করে সরবরাহ করে আসছে খামারটি। কর্তৃপক্ষ বলছে, শূকর উন্নয়ন খামারে রয়েছে ১৪ প্রজাতির ৩৯৮টি শূকর। তবে ১৩ নভেম্বর থেকে মারা গেছে ৭০টি।
সোমবার (২০ নভেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, চার সদস্যবিশিষ্ট একটি মেডিকেল টিম গঠন করে খামারে আক্রান্ত অর্ধশতাধিক শূকরকে ট্রাংকুলাইজার গানের মাধ্যমে (দূর থেকে ইনজেকশন পুশ করার বিশেষ বন্দুক) শূকরদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
খামারে নিয়োজিত কর্মচারী জীবন বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ’দেড় বছর ধরে অনেক পরিশ্রমের মাধ্যমে শূকরগুলো পালন করে বড় করেছি। হঠাৎ শূকরগুলো মরা শুরু করেছে। এখন কী করব কিছুই বুঝতে পারছি না। ঔষধেও বাঁচানো যাচ্ছে না।’
খামারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক ডা. লেলিন দে বলেন, ’১৩ নভেম্বর খামার পরিদর্শন এসে দেখি বেশ কয়েকটি শূকর অসুস্থ আর তিনটি মরে পড়ে আছে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। পরে চার সদস্যের মেডিকেল টিম গঠন করে মৃত শূকরগুলো ময়নাতদন্ত করা হয়। আর সংগ্রহ করা নমুনা ঢাকা ও চট্টগ্রামের গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনও কোনো রিপোর্ট পাইনি।’
জানতে চাইলে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তুষার কান্তি চাকমা বলেন, ’একটি শূকরের মরদেহ ময়নাতদন্ত করে নমুনা চিটাগাং ভেটেনারি ইউনিভার্সিটিতে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে আফ্রিকান সোয়াইন ফিভার বলে প্রাথমিক প্রতিবেদন দেওয়া হয়। সেই মতে চিকিৎসাও চলছে। কিন্তু মৃত্যু বন্ধ করা যাচ্ছে না।’
এদিকে অধিকতর পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পিসিআর ল্যাবে মারা যাওয়া শূকরের নমুনা পাঠানো হয়েছে বলেও জানান জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মর্কতা। তিনি বলেন, ’এতে রোগ নির্ণয় করা হলে সে অনুযায়ী চিকিৎসা দিলে শূকরের মৃত্যুর হার কমানো যাবে। আমরা ধারণা করছি, এটি আফ্রিকার সোয়াইন ফিভার হতে পারে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত শূকরের মৃত্যুর হার ৮০-৯০ শতাংশ। এটি হলে পাহাড়ের শূকর চাষিরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’