× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ভালোবাসার গোলাপে রাজনীতির আঁচ

সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা

প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:০১ পিএম

সাভারের বিরুলিয়ার গোলাপ গ্রামে বাজারজাত করতে ফুল সংগ্রহ করছেন এক চাষি। প্রবা ফটো

সাভারের বিরুলিয়ার গোলাপ গ্রামে বাজারজাত করতে ফুল সংগ্রহ করছেন এক চাষি। প্রবা ফটো

রাজধানীর অদূরে সাভারের বিরুলিয়া সাদুল্লাহপুর। আঁকাবাঁকা সরু পথের ধার ঘেঁষে অসংখ্য গোলাপের বাগান। হেমন্তের মাঝামাঝি লাল গোলাপের সমারোহ। মাঝে মাঝে কিছু সাদা গোলাপ, গ্লাডিওলাস, জারবেরার বাগানও চোখে পড়ে। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতায় নয়নাভিরাম এরকম দৃশ্যও স্বস্তি দিতে পারছে না চাষিদের। 

করোনা ও ছত্রাকের সংকট কাটিয়ে কেবল লাভের মুখ দেখতে পাওয়া চাষিরা ফের শঙ্কায় পড়েছে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে। এর ফলে বাগানে ফুল ফুটলেও ফড়িয়ারা (পাইকারি ব্যবসায়ী) না আসায় বেচাকেনায় ধস নেমেছে। সেই সঙ্গে দর্শনার্থী না থাকায় বিক্রি কমেছে খুচরা বাজারেও।

জানা যায়, সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নে তুরাগ নদের তীরে এই গোলাপ গ্রাম। শ্যামপুর, সাদুল্লাহপুর, মৈস্তাপাড়া, বাগ্নিবাড়ি, বাটুলিয়া, কমলাপুর ও আরাবাগসহ গ্রামগুলোতে ৩৫০ হেক্টর জমিতে গোলাপের চাষ হয়েছে। আর গোলাপ চাষের সঙ্গে জড়িত আছে প্রায় দেড় হাজার কৃষক। গোলাপ বিক্রির জন্য শ্যামপুর ও মৈস্তাপাড়ায় গড়ে উঠেছে ফুলের হাট। বিকালের আগে বাগান থেকে ফুল তুলে বাজারে নিয়ে যায় চাষিরা। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে ফুল বেচাকেনা। স্থানীয় ফড়িয়ারা দুই বাজার থেকে ফুল কিনে সরাসরি রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করে। এতে প্রতিদিন ২-৩ লাখ টাকা বিক্রি হয় এই দুই বাজার থেকে। গত বছর এই সময়ে বিক্রি ছিল প্রতিটি গোলাপ ৭ টাকায়। তবে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩ টাকায়। 

সাদুল্লাহপুর, মৈস্তাপাড়া, বাগ্নিবাড়ি, বাটুলিয়া ঘুরে দেখা যায়, বিরুলিয়া যেন রূপান্তর হয়েছে গোলাপ উদ্যানে। মাঠের পর মাঠজুড়ে লাল, সাদা, হলুদ রঙের গোলাপের সমারোহ। শুধু মাঠ নয়, বসতবাড়ির আঙিনাতেও ফুটে আছে গোলাপ। গোলাপচাষিদের কেউ ব্যস্ত আছে গোলাপ তুলতে, কেউ বাগান থেকে তোলা গোলাপ তরতাজা রাখতে পানিতে রাখছে, কেউ গোলাপ বাজারে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কেউ আবার ঝাঁকা বোঝাই করে গোলাপ নিয়ে ছুটছে স্থানীয় ফুলের বাজারে। 

সাদুল্লাহপুর গোলাপচাষি নাজিমউদ্দিন ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, গত বছর মোটামুটি ভালোই লাভ হয়েছে। তবে এ বছর সিজনের শুরুতে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। ফুল তুলে বিক্রি না হলে কম টাকায় দিয়ে আসতে হয় খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে। আগের বছর এই সময়ে প্রতিটি বিক্রি হয়েছে ৫-৬ টাকা করে। তবে এই সিজনে শুরুতে বিক্রি করতে হচ্ছে ২-৪ টাকা প্রতিটি গোলাপ। প্রতিদিন যে টাকা খরচ হচ্ছে তার অর্ধেকও ফুল বিক্রি হয় না।

গোলাপ গ্রামের ফুলচাষি আশরাফুল আলম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, বর্তমানে যে অবস্থা চলছে সেই পরিস্থিতি বেশি দিন থাকলে লোকসানে পড়তে হবে ফুলচাষিদের। সেই সঙ্গে বেকার হবে কয়েকশ কর্মচারী। অবরোধে দূরের ফড়িয়ারা আসতে পারে না। এলেও ঝুঁকি নিয়ে বেশি ফুল নিতে চায় না। এতে দাম কমে যাচ্ছে ফুলের। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে দাম ভালো পাওয়া যেত। এ ছাড়া গোলাপ গ্রামে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী কম আসায় খুচরা বিক্রিও কমে গেছে। 

ফুলবাগানে মালীর কাজ করা শাকিল আহম্মেদ বলেন, ‘শীতের সিজন শুরু হলে মাত্র তিনশ টাকা হাজিরায় গোলাপ বাগানে কাজ করি। অবরোধে ফুলের বেচাকেনা কম। এতে আমাদের হাজিরাও কম দিচ্ছেন বাগানমালিকরা।’

সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, গত কয়েক বছর গোলাপ গ্রামের পরিধি বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে কর্মসংস্থান। আমরা চাচ্ছি গোলাপের পাশাপাশি কীভাবে বিভিন্ন জাতের ফুল ও সবজি উৎপাদন করা যায়। সেই সঙ্গে অনেক কৃষককে প্রশিক্ষণ ও বিনামূল্যে চারা দেওয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা