প্রবা প্রতিবেদক, বরিশাল
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৪১ পিএম
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:০৩ পিএম
বরিশালের সদর রোডে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি প্রভাবে ভারি বর্ষণে তলিয়ে যায় রাস্তা ঘাট। ছবি : জুয়েল রানা
ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে বরিশালে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে নগরীর অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৈদ্যুতিক তারে ডালপালা পড়ে নগরীর ৬০ ভাগ এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। বরিশাল আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক বশির আহমেদ জানান, শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বেলা ৩টা পর্যন্ত বরিশালে ২১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। মিধিলার প্রভাবে সর্বোচ্চ ৫৫ কিলোমিটার গতিবেগে বাতাস বইছে। বর্তমানে বৃষ্টিপাত ও বাতাস বন্ধ হয়েছে। তবে আরও বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বৃষ্টিতে নগরীসহ আশপাশের নিম্নাঞ্চলে পানি জমে গেছে। নগরীর ভাটিখানা এলাকার বাসিন্দা শাহ মুনির জানান, বৃহস্পতিবার বিকালের পর থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়। শুক্রবার ভোর থেকে মাঝারি ও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝড়ো বৃষ্টি হয়। একটানা বেলা ৩টা পর্যন্ত অঝোরধারায় বৃষ্টি হয়। এতে ভাটিখানা এলাকায় হাঁটুপানি জমে যায়।
সবচেয়ে বেশি পানি জমেছে নগরীর বটতলা থেকে হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা পর্যন্ত সড়কে। এ ছাড়া এ সড়কের আশপাশের এলাকা কোমর সমান পানিতে ডুবে গেছে। পারভেজ রুবেল নামে একজন জানান, সড়কে মানুষ জাল দিয়ে মাছ শিকারে মেতে উঠেছে। শিশুরা সাঁতার কেটেছে। সড়কের আশপাশের অলিগলিও পানিতে ডুবে কয়েক হাজার বাসিন্দা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এ ছাড়া নগরীর সদর রোড, ফজলুল হক অ্যাভিনিউ, কেডিসি রোড, অক্সফোর্ড মিশন রোড, কালু শাহ সড়ক, বগুড়া রোড, ফকিরবাড়ী রোড, মল্লিক রোড, বাংলাদেশ ব্যাংক গলি, শ্রীনাথ চ্যাটার্জি লেনের বাসিন্দারা পানিবন্দি রয়েছে।
জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত করতে কাজ করছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, কীর্তনখোলা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে বৃষ্টির পানি কম নামছে। নদীর পানি কমে গেলে নগরীর জলাবদ্ধতা কমে যাবে। ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করে পানি নামার গতি বাড়াতে ৫০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাজ করছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বরিশালের তথ্যানুযায়ী কীর্তনখোলা নদীর পানির বিপজ্জনক সীমা ২ দশমিক ১৪ মিটার। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় পানির লেভেল ছিল ১ দশমিক ১৩ মিটার।
এ ছাড়া বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নগরীর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওজোপাডিকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক হোসেন জানান, তার অধীনে ১৬ ফিডারের মাধ্যমে ৬৫ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টা পর্যন্ত ৪০ ভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় বৈদ্যুতিক তারে ডালপালা অপসারণের কাজ চলছে। রাত ১০টার মধ্যে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, তার ১৬ ফিডারের ৬৪ হাজার গ্রাহক রয়েছে। সন্ধ্যা সোয়া ৭টা পর্যন্ত ৭০ ভাগ গ্রাহকের বিদ্যুৎ চালু করা হয়েছে। বাকি ৩০ ভাগ দুই ঘণ্টার মধ্যে চালু করা সম্ভব হবে।