মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৩৯ পিএম
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৪৫ পিএম
ঘূর্ণিঝড় মিধিলির ঝড়বৃষ্টিতে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি মোংলায়। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে এখানকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ঝড়বৃষ্টির কারণে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত পৌর শহরের প্রধান বাজারে তেমন কোনো লোকজনও ছিল না। শহরের দোকানপাট-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও ছিল বন্ধ।
ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাব ছিল শুক্রবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্তই। এ সময়ের বৃষ্টিতে শহর ও শহরতলির নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাটে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। দুপুরের পর থেকে হঠাৎ করে কমে যায় বৃষ্টি-বাতাস। বিকালে ও সন্ধ্যায় বাতাস না থাকলেও মাঝে মাঝে ঝরছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি।
মিধিলির প্রভাবে শুক্রবার বন্দরে অবস্থানরত ১৫টি বিদেশি জাহাজের পণ্য ওঠানামা ও পরিবহন বন্ধ ছিল। আজ থেকে পুনরায় স্বাভাবিক হবে বন্দরের জাহাজের পণ্য ওঠানামা কার্যক্রম।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ এলাকার বিশাল একটি জনগোষ্ঠীর প্রধান আয়ের উৎস চিংড়ি চাষ। ঝড়বৃষ্টিতে প্রতিনিয়ত চিংড়ি ঘেরের মাছ বেরিয়ে গিয়ে আর্থিক ক্ষতি হলেও ঘূর্ণিঝড় মিধিলিতে তেমন ক্ষতি হয়নি ঘের মালিকদের। তবে বৃষ্টিতে ঘেরগুলোতে পানি বাড়লেও মাছ ভেসে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি। তবে আবারও যদি বৃষ্টিপাত হয় সেই ক্ষেত্রে ক্ষতক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃষ্টি ও বাতাসের তীব্রতার গতিশক্তি খুব বেশি না হওয়াতে মোংলার কোথাও গাছপালা ও ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েনি। জোয়ারের পানিরও চাপ তেমন ছিল না। ফলে রাস্তা ও বাঁধেরও কোনো ক্ষতি হয়নি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জাফর রানা জানান, ঘূর্ণিঝড় মিধিলি খুব বেশি শক্তিশালী না হওয়ায় ঘরবাড়ি, গাছপালা, রাস্তাঘাট ও বাঁধের কোথাও কোনো প্রকার ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপংকর দাশ বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি ছিল উপজেলা প্রশাসনের। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতেও কোথাও কোনো ক্ষতি হয়নি ঝড়-বৃষ্টি-বাতাসে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক নুর আলম শেখ বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন আমাদের মায়ের মতোই। এই বন আমাদের কাছে সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঢাল স্বরূপ। সুন্দরবনই বিভিন্ন সময়ে নিজের বুকে ঝড়-জ্বলোচ্ছ্বাস আগলে নিয়ে আমাদেরকে রক্ষা করে আসছে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি, মিধিলির গতিকে স্লথ করে দিয়েছে সুন্দরবন। তাই আমরা নিরাপদ থাকতে পেরেছি।
তিনি আরও বলেন, সুন্দরবন আমাদের দুর্যোগ রক্ষার ঢাল, তাই এ ঢালকে আমাদেরকেই সংরক্ষণ ও সুরক্ষা করতে হবে।