সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৩৫ পিএম
আবুল কালাম। প্রবা ফটো
ঢাকার সাভারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) অভিযানে আবুল কালাম নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে মারধর ও বাড়িতে লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাকে ছেড়ে দিতে পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে। টাকা না দেওয়ায় ১০৫ পিস ইয়াবা দিয়ে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সিঅ্যান্ডবি এলাকা থেকে আবুল কালামকে আটক করে ডিএনসির ঢাকা (ক-সার্কেল)। তাকে ছাড়াতে পরিবারের কাছে চাওয়া হয় পাঁচ লাখ টাকা। টাকা না পেয়ে ১০৫ পিস ইয়াবা দিয়ে ডিএনসির উপপরিদর্শক আকবর আলী বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন। এ ছাড়া ঘটনার দিন আটককৃত আবুল কালামের পরিবারের পক্ষ থেকে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে সাহায্য চাওয়া হয়। পরদিন নিকটবর্তী আশুলিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে যোগাযোগ করা হয়। পরিবারটির দাবি- পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের কোনো সহযোগিতা করা হয়নি।
আবুল কালামের স্ত্রী নিপা বেগম বলেন, অসুস্থ থাকায় বড় মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। বাসায় ফিরে দেখি শোকেসের গ্লাস ভেঙে একটি স্বর্ণের চেইন, একজোড়া রুপার নুপুরসহ বেশকিছু মালামাল কে বা কারা নিয়ে গেছে। এ ছাড়া ঘরে থাকা ওয়ারড্রপের ড্রয়ার ভেঙে নগদ ৬০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। প্রতিবেশীদের কাছে জানতে পারি ডিএনসির লোকজন আমার স্বামীকে ধরে মারধর করে এসব নিয়ে গেছে।
বড় মেয়ে কলি আক্তার জানান, সেই দিন বিকালে তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে বাবাকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। ঘটনার তিন দিন পর জানতে পারি, বাবাকে ১০৫ পিস ইয়াবা দিয়ে আদালতে চালান করে দিয়েছে। মামলার সাক্ষী দুজনের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে লালবাগ। আমার প্রশ্নÑ আটক করা হয়েছে আশুলিয়া থেকে, সাক্ষী কীভাবে লালবাগের হয়। আটকের সময় তো এখানে অনেকেই উপস্থিত ছিল, তাদের কেন সাক্ষী করা হলো না? এতেই প্রমাণিত হয়, বাবাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে।
মামলার বাদী ডিএনসি ঢাকার (ক-সার্কেল) উপপরিদর্শক আকবর আলীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সেখানে কর্মরত নেই। খুলনায় বদলি হয়েছি। সেই অভিযানে নুসরাত ম্যাডামের নেতৃত্বে গিয়েছিলাম। সঙ্গে ছিল সহকারী উপপরিদর্শক জিয়া, সোর্স নয়নসহ কয়েকজন। যেই অভিযোগ করা হয়েছে সেটি মিথ্যা। বিষয়টি নিয়ে আপনারা নুসরাত ম্যাডামের সঙ্গে কথা বলেন।’ আশুলিয়ার ঘটনায় সাক্ষী হিসেবে লালবাগের দুজন ব্যক্তির নাম দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
জানতে চাইলে পরিদর্শক নুসরাত জাহান বলেন, ‘এ বিষয়ে কিছুই জানি না। মামলার বাদী আকবরকে জিজ্ঞেস করেন। তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে, সেজন্যই বদলি করা হয়েছে।’ অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশনস ও গোয়েন্দা) তানভীর মমতাজকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানানো হলে তিনি বলেন, ‘ভালো কাজ করেছেন। আমরা চাই এ ধরনের অন্যায়ের বিষয়গুলো জানান। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’