× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

টেনেটুনেও চলে না সংসারের চাকা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:৫৯ পিএম

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় দিনের পর দিন ভুগছে নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও। দামের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে আলু, ডিম ও পেঁয়াজ। এর মধ্যে রাজনৈতিক কমসূচিতে নতুন করে বিপাকে পড়তে হয়েছে খেটে খাওয়া মানুষের। ফলে সংসার চালানো রীতিমতো যুদ্ধের চেয়েও কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানায় দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ। বৃহস্পতিবার (১ে৬ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বললে এসব চিত্র তুলে ধরেন তারা।

পশ্চিম দেওভোগ মাদ্রাসা বাজারে কথা হয় সবজি বিক্রেতা আসগর আলীর সঙ্গে। বয়স পঞ্চাশের বেশি। দুশ্চিন্তাগ্রস্ত আসগর আলী বসে আছেন তার ভ্যানগাড়ির কর্নারে। কিছু সাদা পুঁই, ডাঁটা ও পাটশাক নিয়ে বসে আছেন। আজগর আলী জানান, সাতজনের সংসার। তিনি শাক বিক্রি করে ৩০০ টাকার বেশি আয় করতে পারেন না। কোনো দিন ২০০ টাকাও আয় হয়। এক আঁটি পাটশাক ৩০ টাকা। ডাঁটা এক মুঠো ৩০ টাকা। মানুষ নিতে চায় না। এ সময় দাম কমার কথা থাকলেও হরতাল-অবরোধের কারণে সরবরাহে বিঘ্ন হচ্ছে।

শফিকুল মিয়া। ১৯ বছরের তরুণ। পেশায় অটোচালক। গ্রামের বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদীতে। তিনি নারায়ণগঞ্জের মাসদাইর তালা ফ্যাক্টরি এলাকায় থাকেন। এই এলাকারই একটি গ্যারেজের অটো ভাড়ায় চালান। অটোর ভাড়া দৈনিক সাড়ে ৪০০ টাকা। মাসে ১০ হাজার টাকা আয় করতেই কষ্ট হয়। মেসে থাকা ও খাওয়ার খরচ। টেনেটুনেই মাস চালানো দায় বলে জানান তিনিও।

নিম্ন আয়ের মানুষ ছাড়াও চাকরি করেন তাদের চিত্রও প্রায় একই রকম। কামাল হোসাইন পাঁচ বছর ধরে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করছেন। সর্বসাকুল্যে বেতন পাচ্ছেন ২২ হাজার টাকা। বাসাভাড়া ও গ্যাস-বিদ্যুৎ বিল পরিশোধেই বেতনের অর্ধেক টাকা শেষ। বাকি টাকা দিয়ে কোনোমতে চলে তার সংসার। 

একাধিক চাকরিজীবী জানান, বেশিরভাগ মানুষের বেতনসীমা ১৫ থেকে ২৫ হাজারের ঘরে। আজ থেকে ৫ বছর আগে সেই টাকায় মোটামুটি সংসারের ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব ছিল। এখন এ সময়ের ব্যবধানে প্রতিটি পণ্যের দামই দ্বিগুণ কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে গেছে। নিত্যপণ্যের সঙ্গে বাসাভাড়া, সন্তানের পড়াশোনার খরচ, যাতায়াত ও চিকিৎসার খরচ মেটাতে মাসের প্রথম সপ্তাহে ৯০ শতাংশ টাকা শেষ। বাকি সময়টা আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে ধারদেনা করে করে চলতে হচ্ছে।

খুচরা বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বর্তমানে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা, পেঁয়াজ ৬৫-৭০ টাকায়, রসুন ১৮০ টাকা, আদা ২০০ টাকা এবং সয়াবিন তেল এক লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৭৪ টাকা। এ ছাড়া বাজারে মোটা সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়, আতপ চাল বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৬০ থেকে ৯০ টাকায়। অপরদিকে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকায়। এ ছাড়া পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা এবং রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা। অপরদিকে বাজারে বর্তমানে ৬০-৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই।

নগরীর নিতাইগঞ্জ ও দ্বিগুবাবু বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম আগের চেয়ে কমেছে। তবে আমাদের দেশে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানির খরচ বেড়ে গেছে। কোনো ব্যবসায়ী তো আর লোকসান দিয়ে ব্যবসা করবেন না। অপরদিকে খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিমত, পাইকারদের থেকে একটা নির্দিষ্ট মুনাফায় খুচরা ব্যবসায়ীরা পণ্য কিনেন। বর্তমানে দোকান ভাড়া, গ্যাস-বিদ্যুৎ খরচ বেড়েছে। আমাদের অতি মুনাফা করার সুযোগ নেই।

এদিকে, সম্প্রতি জেলা প্রশাসন কৃষি বিপণন অফিসসহ অন্য অফিসের সমন্বয়ে মহানগরীর নিতাইগঞ্জ, কালিরবাজার ও দ্বিগুবাবুর বাজারের ব্যবসায়ী নেতাদের নিয়ে সভা করেছে। উক্ত সভায় আলু, পেঁয়াজ ও ডিম ব্যবসায়ী নেতারা উল্টো জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন সিন্ডিকেটের বিরদ্ধে। ব্যবসায়ী নেতারা নিজেদের গা বাঁচিয়ে গেছেন এই কথা বলেÑ ‘বেশি দামে কিনি, বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়’। যদিও জেলা প্রশাসকের কাছে তারা আলু, পেঁয়াজ ও ডিম সিন্ডিকেটকারীদের নামের তালিকা ও মোবাইল নাম্বারও জমা দিয়ে এসেছেন। 

নারায়ণগঞ্জ কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) নেতারা বলেন, আমাদের দেশের বাজার প্রতি পদে পদে রয়েছে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। এসব সিন্ডিকেট সরকারকেও জিম্মি করে ফেলে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা