ঘূর্ণিঝড় মিধিলি
বরিশাল অফিস
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ১১:৪৮ এএম
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:০০ পিএম
ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকাল থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি দমকা হাওয়াও বইছে।
আর বৈরী এ আবহাওয়ার কারণে বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ রুটে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএ’র উপপরিচালক ও বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, নদীবন্দরে এমনিতে ২ নম্বর সংকেত থাকায় সকালে ৬৫ ফুটের নিচের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে এখন বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করায় সম্ভাব্য আগাম সতর্কতা হিসেবে অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চসহ সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আর এ নির্দেশনা পরবর্তী ঘোষণা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলেও জানান তিনি।
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক বশির আহমেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বরিশালে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে ঝোড়ো-দমকা হাওয়া বইছে। ঘণ্টায় ১৬ কিলোমিটার বেগে বাতাস হচ্ছে। সন্ধ্যানাগাদ বাতাসের গতি ও বৃষ্টিপাত আরও বাড়বে।
বরিশালের জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার সম্ভাব্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলার ৫৪১টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিভাগীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় মিধিলি মোকাবিলায় বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র এরই মধ্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে ৬ হাজার ২৪৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১ হাজার ৬৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আশ্রয়ের জন্য খোলা রাখার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
বিভাগের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার আশ্রয়কেন্দ্রেই প্রায় ১৩ লাখ মানুষ ও দেড় লাখের অধিক পশু আশ্রয় নিতে পারবে। এ ছাড়া পশুদের জন্য বিভাগের ৫২টি মুজিবকেল্লাও প্রস্তুত রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন মিয়া জানিয়েছেন, বরিশাল বিভাগের ১ হাজার ৮৪৫টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে আগে থেকেই। আর যেকোনো ধরনের উদ্ধারকাজে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় ৩২ হাজার ৫০০ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন।
এ ছাড়া বিভাগে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (বিডিআরসিএস) দেড় হাজারের অধিক স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন। স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি বিভাগের দুটি নৌ-স্টেশনসহ ৪২টি স্টেশন এবং সাড়ে আটশ কর্মকর্তা-কর্মচারী ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বরিশাল বিভাগের উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান।