শরীয়তপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:৩০ পিএম
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:৫৩ পিএম
নলকূপের পাইপ দিয়ে বের হওয়া গ্যাসে রান্না হচ্ছে। প্রবা ফটো
শরীয়তপুরের কাচিকাঁটা ইউনিয়নের চরাঞ্চলে নলকূপের পাইপ দিয়ে বের হচ্ছে গ্যাস। সেই গ্যাসে স্থানীয়রা করছে রান্না-বান্নার কাজ। সম্প্রতি এমন ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই স্থানে গ্যাসের মজুদ রয়েছে কি-না, তা জানতে ইতোমধ্যে পেট্রোবাংলাকে চিঠি দিয়েছে শরীয়তপুর জেলা প্রসাশন।
আলোড়ন সৃষ্টিকারী এ ঘটনা ঘটেছে জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার কাঁচিকাটা ইউনিয়নের দক্ষিণ মাথাভাঙা গ্রামে ।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় কৃষক আবু সালাম চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে তার কৃষিজমিতে পানি সরবারহের জন্য নলকূপ স্থাপনের কাজ শুরু করেন। ৪০ ফুট গভীরে পাইপ প্রবেশ করানোর পরেও পানির দেখা পাওয়া যায়নি। পরে আরও ২৫ ফুট পাইপ যোগ করা হয়। এতেও পানি না আসায় অন্য স্থানে নলকূপ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। পরদিন নলকূপ স্থাপনের জন্য করা গর্ত থেকে বুঁদ বুঁদ শব্দ শোনা যায়, এ সময় গ্যাসের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। স্থানীয় এক ব্যক্তি দিয়াশলাই জ্বালিয়ে গর্তের মুখে ধরলে সেখানে আগুন জ্বলতে থাকে। এরপর বিষয়টি পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে বিষয়টি ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই গর্তের মুখে উৎসুক জনতার ভিড়। এ ছাড়াও স্থানীয়রা অস্থায়ী চুলা বসিয়ে ভাত, খিচুড়ি, ডিম ভাজি রান্না করছে।
স্থানীয় যুবক শাহ আলম বলেন, ’প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে নলকূপের গর্ত দিয়ে অনবরত গ্যাস বের হচ্ছে। গ্রামের অনেকেই এই গ্যাসে ভাত-তরকারি রান্না করে খাচ্ছে। বিষয়টি সরকারের ঊর্ধ্বতন বিভাগ থেকে পরীক্ষা করে দেখলে ভালো হয়। এ ছাড়া উৎসাহী মানুষ যেভাবে এখানে আগুন জ্বালিয়ে রান্না করছে, তাতে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। স্থানীয় প্রশাসনের উচিত এ স্থানে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা।’
কৃষক আবু সালাম বলেন, ’নলকূপের জন্য করা গর্ত থেকে গ্যাস বের হওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী চুলা স্থাপন করে রান্নাবান্না করছে। এই গ্যাস দিয়ে রান্না করলেও বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ। ইউপি চেয়ারম্যানসহ মেম্বারকে বিষয়টি জানিয়েছি।’
কাঁচিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন দেওয়ান বলেন, ’গ্রামবাসী নলকূপ থেকে বের হওয়া গ্যাসে রান্না করছে। কিন্তু যে স্থানটিতে গ্যাস বের হচ্ছে, স্থানটি পনেরো বছর আগেও পদ্মা নদীর অথৈ পানির নিচে ছিল। কয়েক বছর আগে চর জেগে ওঠা স্থানে গ্যাস থাকার সম্ভাবনা কম। অন্য কোনো কারণে গ্যাস বের হতে পারে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’
ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ’নলকূপ স্থাপন করতে গিয়ে গ্যাস বের হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পেট্রোবাংলাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা এসে গবেষণা করলে বলা যাবে ওখানে গ্যাসের মজুদ আছে কি-না।’