রাঙামাটি প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৪২ পিএম
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৪৩ পিএম
পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের চতুর্থ সংঘরাজ তিলোকানন্দ মহাথেরোর মরদেহ সংরক্ষণের জন্য পেটিকাবদ্ধ (বিশেষ কফিনে প্রবেশ) করার আনুষ্ঠানিকতা যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় সম্পন্ন করা হয়েছে। বুধবার (১৫ নভেম্বর) রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার রূপকারী ইউনিয়নের মগবান শাক্যমণি বৌদ্ধবিহার মাঠ প্রাঙ্গণে পেটিকাবদ্ধ করানোর উপলক্ষে সংঘদান, অষ্ট পরিষ্কার দান ও স্মৃতিচারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান ধর্মীয় গুরু হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি শ্রদ্ধালংকার মহাথের ও সুমনালংকার মহাথেরো।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাঙামাটি সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অং সুই প্রু চৌধুরী, খাগড়াছড়ি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রুমানা আক্তার, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমা, বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুদর্শন চাকমা, বাঘাইছড়ি পৌর মেয়র জমির হোসেন।
স্মৃতিচারণ সভায় বক্তারা বলেন, তিলোকানন্দ মহাথেরো ভান্তে পার্বত্য চট্টগ্রামের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ও মহান আদর্শ পুরুষ। শাসন সদ্বধর্মের শ্রীবৃদ্ধি ও শিক্ষার বিস্তারে আমৃত্যু নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। তার মহাপ্রয়াণে পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশসহ পার্বত্য অঞ্চলের বৌদ্ধ সমাজে বিরাট ক্ষতিসাধিত হয়েছে। পার্বত্য উপত্যকায় বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীসহ শিক্ষানুরাগী প্রত্যেকটি মানুষ তার শূন্যতা অনুভব করবে।
পরে দুপুরে সাধু সাধু ধ্বনিতে সংঘরাজের মরদেহটি সংরক্ষণের জন্য পেটিকাবদ্ধ করানো হয়। এ সময় হাজারো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পেটিকাবদ্ধকরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সমাগম ঘটে। দেশ-বিদেশে ভান্তের ভক্তদের জন্য পেটিকাবদ্ধ করা ভান্তের মরদেহটি এক বছরের জন্য সংরক্ষণ করে রাখা হবে। তিলোকানন্দ মহাথেরো চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে নিজ বিহারে যাওয়ার পথে গত ২ নভেম্বর রাত ১১টায় মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। ১৯৩৭ সালের ২৮ আগস্ট রাঙামাটির শুভলং ইউনিয়নের বেতছড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১১ সালে তিনি পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের চতুর্থ মহাসংঘরাজ হন। পার্বত্য চট্টগ্রামে গরিব, অনাথ ও অসহায় শিশুদের শিক্ষা-দীক্ষায় অনাথালয় ও বিহার প্রতিষ্ঠা করে মানবসেবায় অবদান রাখায় ‘সাদা মনের মানুষ’ উপাধিতে ভূষিত হন। এ ছাড়া মিয়ানমার সরকার কর্তৃক অগ্রমহাপণ্ডিত উপাধিসহ তিনি ছিলেন মগবান শাক্যমণি বৌদ্ধবিহারের আজীবন অধ্যক্ষ, কাচালং শিশু সদনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক।