সিলেট অফিস
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:১২ পিএম
পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা কৈলাশটিলা-২ নম্বর কূপে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। চলতি মাসেই সেখান থেকে গ্যাস উত্তোলন করে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করার কথা। সিলেট গ্যাস ফিল্ডের আওতাধীন এই কূপ থেকে প্রতিদিন ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন ও ৭০ ব্যারেল কনডেনসেট উৎপাদন সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা। ওই কূপে উত্তোলনযোগ্য ৫৩ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ রয়েছে বলে ধারণা করছেন তারা।
সিলেট গ্যাস ফিল্ড সূত্র জানায়, জ্বালানি সংকট নিরসনে গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে সরকার দেশের বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্রে ৪৬টি কূপ অনুসন্ধান, খনন ও পুনঃখননের উদ্যোগ নেয়। ২০২৫ সালের মধ্যে কূপগুলোর খননকাজ শেষ হওয়ার কথা। অনুসন্ধান ও খনন শেষে কূপগুলো থেকে ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ১৪টি কূপ খনন ও পুনঃখননের কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে তিনটি কূপের কাজ শেষ করে গত বছর থেকে উৎপাদন শুরু হয়। এবার আরেকটি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন হলো। উৎপাদনে যাওয়া কূপগুলোর মধ্যে রয়েছে সিলেট-৮, কৈলাশটিলা-৭ ও বিয়ানীবাজার-১। এ তিনটি কূপ থেকে দৈনিক ১৬ থেকে ১৮ মিলিনয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা হচ্ছে। তিনটি মিলে বর্তমানে সিলেট গ্যাস ফিল্ডেরর আওতায় ১৩টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। এগুলো থেকে দৈনিক প্রায় ৯৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া হচ্ছে।
সূত্রটি আরও জানায়, কৈলাশটিলা-২ নম্বর কূপের একটি লেয়ার (স্তর) থেকে গ্যাস উত্তোলনের একপর্যায়ে পানি চলে আসে। গ্যাস উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। সাময়িকভাবে কূপটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। চলতি বছরের ২৭ জুলাই থেকে কূপটি পুনঃখনন শুরু হয়। খননের পর চলতি সপ্তাহেই কূপের অন্য লেয়ারগুলোয় গ্যাসের সন্ধান মেলে। গত ৯ ও ১১ নভেম্বর পরীক্ষামূলকভাবে গ্যাস উত্তোলন করা হয়।
গ্যাস পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা এটি নিয়ে কাজ করছি। এখন মন্ত্রণালয়ে আছি। পরে বিস্তারিত জানাতে পারব।’ কৈলাশটিলা গ্যাসক্ষেত্রের ২ নম্বর কূপের প্রকল্প পরিচালক ড. ফরহাদ উজ্জামান বলেন, কূপটির একাধিক লেয়ারে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। চলতি মাসেই বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলন করে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ করার চেষ্টা চলছে। কূপটির ওয়ার্কওভারে প্রায় ৭১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে।
১৯৫৫ সালে সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর আবিষ্কৃত হতে থাকে একের পর এক গ্যাসক্ষেত্র। বর্তমানে সিলেট গ্যাস ফিল্ডের আওতায় পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র আছে। হরিপুর গ্যাস ফিল্ড, রশিদপুর গ্যাস ফিল্ড, ছাতক গ্যাস ফিল্ড, কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ড ও বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ড। এর মধ্যে ছাতক গ্যাস ফিল্ড পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। বাকিগুলোর মধ্যে ১৩টি কূপ থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ৯৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে।