পাইকগাছা (খুলনা) সংবাদদাতা
প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:১৯ পিএম
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার শিবসা নদের তীরে পলিথিনের স্তূপ। রবিবার শহরের খেয়াঘাট এলাকা থেকে তোলা। প্রবা ফটো
খুলনার পাইকগাছা উপজেলাজুড়ে সর্বত্র বিক্রি হচ্ছে দেড় যুগ আগে নিষিদ্ধ পলিথিন। সেই পলিথিন ব্যবহারের পর ফেলা হচ্ছে এখানে সেখানে। আর এসবের শেষ ঠিকানা হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন নদী-খাল-বিল। শিবসা ও কপোতাক্ষ নদের তীরে পলিথিনের স্তূপ জমেছে। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে খনন করা নদী পরিবেশ দূষণসহ ভরাট হচ্ছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নিষিদ্ধ হলেও থেমে নেই পলিথিনের বিক্রি ও ব্যবহার। নেই বাধা দেওয়ার কেউ। কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে মুদি দোকান, ফলের দোকান, কসমেটিকসের দোকানসহ উপজেলার সব বাজারেই চলছে প্রকাশ্যে পলিথিনের বিক্রি ও ব্যবহার। যেমন বিক্রেতারা বিক্রি করছেন বা বিভিন্ন মালামালের সঙ্গে দিচ্ছেন, তেমনি ক্রেতারাও কিনছেন বা নিচ্ছেন। এতে পিছিয়ে নেই কেউই। পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকলেও সেটা ভুলে গেছেন অনেকেই।
সেই সঙ্গে পলিথিন ব্যবহার ও বিক্রি বন্ধে কোনো অভিযানও চোখে পড়ে না। উল্টো বেড়েছে বিক্রি ও ব্যবহার। কাঁচাবাজার থেকে মুদি দোকান কিংবা হকার থেকে বিপণিবিতান সর্বত্রই মিলছে পলিথিন ব্যাগ। এতে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে পানি নিষ্কাশনের পথে বাধা হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।
উপজেলার ৯০-৯৫ ভাগ মানুষ পলিথিনের কুফল সম্পর্কে অবগত। কিন্তু বিকল্প ও সহজলভ্য কোনো কিছুই না থাকায় ব্যবহার বেড়েছে বলে জানান একাধিক ব্যবহারকারী। তবে দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থাপনা, আইনের প্রয়োগ না হওয়া, পলিথিনের বিকল্প ব্যাগ সহজলভ্য না হওয়া এবং বিকল্প ব্যাগ ব্যবহারে মানুষের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টি না করাকেই দায়ী করছেন পরিবেশকর্মীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার কপিলমুনি বাজারের একাধিক দোকানি জানান, এক কেজি পলিথিন দেড়শ টাকা। কখনও ১০-২০ টাকা কম-বেশি হয়। এক কেজিতে দুই থেকে আড়াইশ পলিথিন থাকে। কিন্তু একই টাকায় যদি ঠোঙা কিনি, তবে তাতে বড়জোর ৭০-৮০টি থাকে। তাই পলিথিনে লাভ বেশি আমাদের।
পাইকগাছা নাগরিক আন্দোলনের সংগঠক প্রশান্ত কুমার মণ্ডল বলেন, আইনে বলা হয়েছে- যদি কোনো ব্যক্তি নিষিদ্ধ পলিথিনসামগ্রী উৎপাদন, আমদানি বা বাজারজাত করে তাহলে ১০ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা, এমনকি উভয় দণ্ডও হতে পারে। এরপরও কোনোভাবেই যেন মানতে চাচ্ছে না ব্যবসায়ীরা। ক্রমাগত নিষিদ্ধ পলিথিন বাজারে সয়লাব হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে পরিবেশের ওপর।
পাইকগাছ পৌরসভার প্যানেল মেয়র শেখ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সরকার পলিথিন নিষিদ্ধ করেছে। পলিথিন বিক্রয় ও ব্যবহার বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। পাশাপাশি পৌরসভার পক্ষ থেকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’