রাজশাহী অফিস
প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৩ ১০:২০ এএম
জ্বালানি তেল পরিবহন। ছবি : সংগৃহীত
রাজশাহী বিভাগের পেট্রোল পাম্পগুলোতে জ্বালানি তেলসহ সবজি ও মাছের মতো পণ্য পরিহনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা জানিয়েছেন, সড়কে পণ্য নিয়ে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় প্রবেশের পর সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ বাহিনী তাদের পর্যাপ্ত সহযোগিতা করছে না। এজন্য তারা সমন্বয়হীনতার অভাবকে দায়ী করছেন।
গত ৬ নভেম্বর বেলা পৌনে ৩টার দিকে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের মোহনপুর উপজেলার নন্দনহাট মোড়ে মুরগির খাবারবোঝাই একটি ট্রাক পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এরপর থেকে ব্যবসায়ী ও চালকদের মাঝে চরম ভীতি কাজ করছে। এ ছাড়া একাধিকবার বিভিন্ন এলাকার রেললাইনে আগুন দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধের চেষ্টা করা হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, অবরোধ সমর্থকরা চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে পণ্যবাহী পরিবহন পুড়িয়ে দিচ্ছে। জনপ্রতিনিধিরা আশঙ্কা করছেন, নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি-জামায়াত সমর্থকরা বিভিন্ন সড়কে চোরাগোপ্তা হামলার পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার দেওয়া তথ্যমতে, আগামী দিনগুলোতে হরতাল-অবরোধের মাত্রা আরও বাড়তে পারে।
রাজশাহী বিভাগে মোট ৮টি জেলা রয়েছে। যেখানে পাম্পের সংখ্যা প্রায় চারশ। দেশের মোট ৪০ শতাংশ মাছ উৎপাদন হয় রাজশাহীতে। সবজি উৎপাদনেও রাজশাহী এগিয়ে। জ্বালানি তেল ও পণ্যবোঝাই করে প্রতিদিন এই অঞ্চল থেকে প্রচুর ট্রাক ও ট্যাংক লরি যাতায়াত করে।
রাজশাহী বিভাগের পেট্রোল পাম্প অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়া তথ্য মতে, সাধারণত শনি ও বৃহস্পতিবার সিরাজগঞ্জ জেলার বাঘাবাড়ী ও নাটোর জেলায় অবস্থিত পদ্মা ও মেঘনা অয়েল ডিপো থেকে পেট্রোল ও ডিজেল সংগ্রহ করা হয়। সম্প্রতি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি এবং লাগাতার হরতাল ও অবরোধের কারণে সড়কে যান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ কারণে পেট্রোল পাম্প প্রতিষ্ঠান মালিকেরা একত্র হয়ে লরি প্রেরণ করছেন। শুধু রাজশাহী জেলা থেকেই প্রতি সপ্তাহে ১০ থেকে ১২টি করে লরি নির্ধারিত ডিপো থেকে জ্বালানি তেল সংগ্রহ করে।
পেট্রোল পাম্প অ্যাসোসিয়েশন ও রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ সংশ্লিষ্টরা জানান, বৃহস্পতিবার বাঘাবাড়ী থেকে জ্বালানি তেলবোঝাই লরি আনতে গিয়ে তারা বিপত্তির মধ্যে পড়েন। সিরাজগঞ্জ হয়ে আসার পথে নাটোরে এসে তারা পুলিশের সহযোগিতা পাননি। শেষ পর্যন্ত তাদের ঝুঁকি নিয়েই রাজশাহী পর্যন্ত আসতে হয়। বিষয়টি রবিবার রাজশাহী জেলা প্রশাসনের আইনশৃঙ্খলা সভায় উত্থাপন করেন ব্যবসায়ী নেতারা।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল আলম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সীমান্ত বালিঘাটা থেকে রাজশাহী মেট্রো সীমান্ত গোদাগাড়ী উপজেলার চাপাল; নাটোর জেলার সীমান্ত পোল্লাপুকুর হতে রাজশাহীর গাঁওপাড়া ঢালান পর্যন্ত; নওগাঁ জেলার সীমান্ত বিদিরপুর হতে রাজশাহীর কামারপাড়া পর্যন্ত পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী পরিবহন চলাচলে নিরাপত্তা দিচ্ছে পুলিশ। রাজশাহীর বাইরের বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি। রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল আওয়াল খান চৌধুরী সর্বত্র পুলিশি নিরাপত্তা দাবি করেছেন।