জামালপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৫০ পিএম
বকশীগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান মুহাম্মদ তামীম। প্রবা ফটো
জামালপুরের বকশীগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান মুহাম্মদ তামীমকে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ দাবি করে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন দলিল লেখকরা। রবিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে দলিল লেখক সমিতির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সাব-রেজিস্ট্রারের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলবে বলে জানান সমিতির সদস্যরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দলিল করতে আসা লোকজন।
দলিল লেখক সমিতি সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৫ অক্টোবর বকশীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন আবদুর রহমান মুহাম্মদ তামীম। যোগদান করেই নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন তিনি। দলিল লেখকদের কাছ থেকে দলিলপ্রতি সাড়ে ৫ হাজার টাকা দাবি করেন। চাহিদামতো টাকা না দিলে দলিল না করার হুমকি দেন। প্রতিবাদ করলে সনদ বাতিলেরও হুমকি দেন তিনি। এই নিয়ে দলিল লেখকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
গত বৃহস্পতিবার তাকে বাড়তি টাকা দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন দলিল লেখকরা। এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। পরে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে রেজিস্ট্রি অফিসকে দুর্নীতিমুক্ত ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে দলিলের পাতাপ্রতি ১৫ টাকা করে নিতে পারবেন দলিল লেখকরা- এমন আদেশ দেন। এর বেশি নিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।
সমিতির সভাপতি ফিরোজ মিয়া বলেন, ‘দলিল লেখক সমিতির নামে আজ পর্যন্ত কোনো চাঁদা নেওয়া হয়নি। অথচ সাব-রেজিস্ট্রার নিজের দোষ ধামাচাপা দিতেই সমিতি ও দলিল লেখকদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। কোনো কারণ ছাড়াই সনদপ্রাপ্ত দলিল লেখকদের সঙ্গে অসদাচরণ, দলিলের দাতা-গ্রহীতাদের নানাভাবে হয়রানি ও খারাপ আচরণ করেন। তাই দলিল লেখকরা মনে করছেন সাব-রেজিস্ট্রার মানসিক ভারসাম্যহীন, তার চিকিৎসা দরকার। তার অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাব-রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান মুহাম্মদ তামীম বলেন, ‘বকশীগঞ্জে যোগদানের পর থেকেই দেখতে পাই, সাব-রেজিস্ট্রারের নাম করে দলিল লেখক সমিতির নেতারা চাঁদা আদায় করে আসছেন। পরে মৌখিকভাবে তাদের সতর্ক করি। কিন্তু দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও তা বন্ধ হয়নি, বরং মাত্রাতিরিক্ত চাঁদা আদায় করতে থাকে। এরপর দলিল লেখক সমিতির নামে বাড়তি চাঁদা আদায় ও দুর্নীতি বন্ধের ঘোষণা দিয়ে অফিসে আদেশ জারি করি। চাঁদাবাজি বন্ধ করে দেওয়ার কারণে দলিল লেখকরা আমার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছেন। দুর্নীতি বন্ধ করার কারণেই তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন।’ যারা তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে আখ্যা দিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আদালতের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি।