× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

নারায়ণগঞ্জ

বিএনপির নেতারা আত্মগোপনে, মনোবল হারিয়েছে কর্মীরা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:০৮ পিএম

আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:০৮ পিএম

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

বিএনপির এক দফা দাবিতে চলমান হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিতে রাজপথে দেখা যায়নি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের। ফলে কর্মসূচিগুলোতে কর্মীদের উপস্থিতিও ছিল হাতে গোনা। সাংগঠনিক অবস্থা শক্তিশালী না হওয়ায় আন্দোলনে এমন দৈন্য বলে মনে করছেন দলটির কর্মী-সমর্থকেরা। 

তৃণমূলের একাধিক কর্মীর সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে নিতে শোডাউনসহ দৌড়ঝাপের কোনো কমতি রাখেন না নেতারা। এমনকি পদ পাওয়ার জন্য অর্থ খরচ করেও কেন্দ্রীয় নেতাদের নজর কাড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু এই নেতারাই দলীয় কর্মসূচি পালনে ঝিমিয়ে পড়েন। 

এ ব্যাপারে আত্মগোপনে থাকা জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু বারবার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। খুদেবার্তা পাঠালেও মেলেনি কোনো উত্তর। 

বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো গত ২৯ অক্টোবর সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ঘোষণা করে। হরতাল শেষে ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিন, ৫ ও ৬ নভেম্বর দুই দিন এবং ৮ ও ৯ নভেম্বর দুই দিনসহ মোট সাত দিন অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। 

দলটির সূত্রে জানা যায়, কর্মসূচিতে বিএনপির হাইকমান্ড সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে মাঠে থেকে কর্মসূচি সফল করার জন্য নির্দেশনা দেয়। একই সঙ্গে সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবন্ধ হওয়ারও নির্দেশনা দেয়। কিন্তু কর্মসূচিতে কড়া নির্দেশনার কোনো প্রতিফলন হয়নি বলে মত তৃণমূল বিএনপির। বিএনপির তৃণমূলের কর্মীরা জানান, হরতালের দিন ও অবরোধের প্রথম দিন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ আড়াইহাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সরাসরি রাজপথে থেকে পিকেটিং করেছেন। পুলিশ ও আওয়ামী লীগ যৌথভাবে তার সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে। আজাদের এলাকার চিত্র পুরো জেলায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। কিন্তু দিন শেষে তার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার পাশপাশি মামলা ও পুলিশের ব্যাপক অভিযানের কারণে তাকে পিছু হটতে হয়েছে। 

একইভাবে প্রথম দুই দিন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে রাজপথে দেখা গেলেও এরপর তাকে আর দেখা যায়নি। তবে হরতাল থেকে শুরু করে তিন দফার অবরোধে বিভিন্ন কৌশলে কিছুটা সক্রিয় ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ শহরে সক্রিয় ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু। তবে গত বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করার আগ মুহূর্তে সাদা পোশাকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। 

এ ছাড়া বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক মামুন মাহমুদের সমর্থকরা সিদ্ধিরগঞ্জে, কাজী মনিরুজ্জামানের সমর্থকরা রূপগঞ্জে, আজহারুল ইসলাম মান্নানের সমর্থকরা সোনারগাঁয়ে, দীপু ভূঁইয়ার সমর্থকরা রূপগঞ্জে, জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিনের সমর্থকরা লিংক রোডে কিছুটা পিকেটিং করেছে। 

তবে চলমান আন্দলোনে বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান, মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দীপু, অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, আজহারুল ইসলাম মান্নান, বিএনপির সহ অর্থবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন ও আড়াইহাজারের সাবেক এমপি আতাউর রহমান খান আঙ্গুরকে মাঠে পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেন কর্মীরা। প্রায় একই অবস্থা জেলা ও মহানগর যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ নেতাদের। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মী জানান, বিচ্ছিন্নভাবে ঝটিকা মিছিল, দুই-একটি গাড়ি ভাঙচুর ও সড়কে টায়ার জ্বালালেই কর্মসূচি সফল হয় না। বিএনপির মতো একটি দলের কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে যদি এমন পরিস্থিতি দেখা যায়, তাহলে কর্মীদের মনোবল এমনতিইে নষ্ট হয়ে যায়। এমন পরিবেশে সাধারণ কর্মীরা মাঠে টিকে থাকবে কীভাবে? 

ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা আরও বলেন, বিগত দিনে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর এবং অঙ্গসংগঠনের কমিটিতে শীর্ষ পদ পেতে কী পরিমাণ লবিং-গ্রুপিং হয়েছে চিন্তাও করা যাবে না। আবার কমিটিতে একটা পদ পেতে শীর্ষ নেতাদের বাড়িঘর আর অফিসে দৌড়ঝাপ করতে করতে অনেকের জুতার তলা ক্ষয় হয়ে গেছে। কিন্তু পদ-পদবি পাওয়া সেই নেতারা এখন কোথায়। শুধু কমিটির পদধারী নেতারা নামলেই তো জমজমাট আন্দোলন হয়। 

এ প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, মামলা-হামলা তো থাকবে। গত ১৪-১৫ বছর তো এগুলো নিয়েই চলতে হয়েছে। মামলা কি পিছু ছেড়েছে। মামলা হয়েছে আরও হবে। এসব মাথায় রেখেই আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হবে। তা ছাড়া শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বিরোধ, মতপার্থক্য ও গ্রুপিংয়ের কারণে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হতে পারেনি। 

এদিকে পুলিশ ও বিএনপির তথ্যমতে, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত জেলার ৭টি থানায় নাশকতার অভিযোগ এনে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথকভাবে ১৭টি মামলা করা হয়। এর মধ্যে ১৬টি মামলার বাদী পুলিশ। রূপগঞ্জ থানার একটি মামলার বাদী ছাত্রলীগের কর্মী। এসব মামলায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৭৪৭ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে কয়েকশ ব্যক্তিকে। ৮ নভেম্বর পর্যন্ত এসব মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৯৫ জনকে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা