× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

প্রশান্তির স্থানে চরম ভোগান্তি

সাইদুর রহমান আসাদ, সুনামগঞ্জ

প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ১১:৪৬ এএম

তাহিরপুরের বড়গোপ টিলার ওপর প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। প্রবা ফটো

তাহিরপুরের বড়গোপ টিলার ওপর প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। প্রবা ফটো

পাহাড়, নদী আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মেলবন্ধন সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বড়গোপ টিলা (বারেক টিলা)। সবুজে মোড়া উঁচু টিলার এক পাশে পাহাড়, অন্য পাশে স্বচ্ছ জলের যাদুকাটা নদী। টিলার ওপর দাঁড়ালে হাতছানি দেয় মেঘ-পাহাড়। প্রকৃতির এমন সৌন্দর্যের মেলবন্ধন দেখতে ছুটে আসেন পর্যটকরা। তবে সৌন্দর্যের এ লীলাভূমি দেখে চোখ জুড়ানোর পরিবর্তে শঙ্কা আর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পর্যটকদের। কারণ টিলার ওপর সড়কটি কয়েক বছর ধরে বেহাল। খানাখন্দে ভরা সড়কে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে পর্যটকেরা। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালে তাহিরপুরে এসে বড়গোপ টিলাকে ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র গড়ার ঘোষণা দেন। ২০১৩ সালে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বারেক টিলায় ২০ একর জমি অধিগ্রহণ করে জেলা প্রশাসন। ২০১৬ সালে মন্ত্রণালয় জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে টিলার ৫০ শতক জমিতে ‘আমব্রেলা প্রকল্প’ স্থাপনের কথা বলে। কিন্তু আজও শুরু হয়নি এ প্রকল্পের কাজ। টিলায় মোট ৩১২ একর জমি। এখানে দীর্ঘদিন ধরে কিছু সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী পরিবার বাস করে আসছে। টিলায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আশ্রয় কেন্দ্র ও উপাসনালয় (গির্জা) রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বড়গোপ টিলার পূর্বে যাদুকাটা নদী। উত্তরে ভারতের মেঘালয় পাহাড়। পশ্চিমে কয়েকটি সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী গ্রাম। গ্রামের পরে ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্প, তার দক্ষিণে টাঙ্গুয়ার হাওর। সব মিলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এলাকাটি। টিলার ওপর নতুন করে বেশ কিছু ঘরবাড়ি হয়েছে। টিলার মাঝখান দিয়ে একটি সড়ক গেছে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে। এই সড়ক দিয়েই টাঙ্গুয়ার হাওর, ট্যাকেরঘাট শহীদ সিরাজ লেক ও বড়ছড়া-চারাগাঁও শুল্ক স্টেশনে যাতায়াত করতে হয়। প্রায় দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটির বেশিরভাগ জায়গায়ই বড় বড় গর্ত। টিলার মাঝে আঁকাবাঁকা এ সড়কের স্থানে স্থানে পাথর উঠে এসব গর্ত হয়েছে। বিভিন্ন যানবাহনে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন পর্যটকরা। মাঝে মাঝে দুর্ঘটনার শিকারও হচ্ছেন তারা। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সড়কটি সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। সম্প্রতি ‘হাওর এলাকায় উড়াল সড়ক ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় বড়গোপ টিলার নিচ দিয়ে সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে বাদ পড়ে যাচ্ছে টিলার ওপরের সড়ক।

স্থানীয় বাসিন্দা শঙ্কর মারাক বলেন, ‘বড়গোপ টিলার ওপরে এনজিওর রাস্তা ছিল। পরে এলজিইডি’র মাধ্যমে এটিকে উন্নয়ন করা হয়। সে রাস্তা ভেঙেচুরে বেহাল দশা। অথচ এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন স্থানীয়রাসহ প্রচুর পর্যটক চলাচল করত। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। মাঝে মাঝে দুর্ঘটনাও ঘটে। এই দুর্ভোগ থেকে উত্তরণের জন্য দ্রুত রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।’ 

ঢাকা থেকে বেড়াতে আসছেন মো. শাহাজাহান। তিনি বলেন, ‘অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হলে সুন্দর পরিবেশ, বাহন ও পর্যটক আসবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল দিতেও অসুবিধা হয়। তাই দ্রুত রাস্তাটি সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া দরকার। 

সুপ্রিয়া দাস নামে একজন বলেন, ‘এখানে হাওর, নদী, পাহাড় একসঙ্গে। এত সুন্দর, নির্জন প্রাকৃতিক শোভামণ্ডিত জায়গায় এসে ভালো লাগছে। তবে টিলার ওপর সড়কটির অবস্থা বেহাল। যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।’ 

গাজীপুর থেকে এসেছেন মো. মাসুম। তিনি বলেন, ‘শহীদ সিরাজ লেক থেকে ঘুরে যাদুকাটা ও মেঘালয়ের সৌন্দর্য দেখতে বড়গোপ টিলায় এসেছি। প্রতি বছরই এখানে আসি। সড়কের বেহাল দশার কারণে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে। মানসিক প্রশান্তির জন্য এসে দুর্ঘটনার শিকার হলে, তার মতো দুঃখজনক আর কিছু নেই। সড়কটি দ্রুত মেরামত করা হোক।’

মোটরসাইকেল চালক আমিনুল হক বলেন, ‘পর্যটকদের পাশাপাশি এই এলাকার বাসিন্দাদের চলাচলের প্রধান সড়ক এটি। ময়মনসিংহ, নেত্রকোণার কিছু মানুষ এদিকে চলাচল করে। আমরাও এদিকে যাত্রীদের নিয়ে আসি। অনেক সময় ভাঙা রাস্তার জন্য দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। মোটরসাইকেল নষ্ট হয়ে যায়।’

জানতে চাইলে এলজিইডির সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব আলম বলেন, ‘শিমুল বাগানের পাশ থেকে বড়গোপ টিলা হয়ে যে সড়কটি গেছে সেটি পর্যটন করপোরেশনের মাধ্যমে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুত হয়তো কাজ শুরু হবে।’  

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা